Image default
বাংলাদেশ

টিকা নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ব্রিফিংয়ের পরিপ্রেক্ষিতে টিআইবির বক্তব্য

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কোভিড টিকার খরচ নিয়ে নানা ধরনের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) টিকা কেনার খরচ নিয়ে ‘মন্ত্রণালয় টিকা ক্রয় ও বিতরণ বাবদ খরচের হিসেব আরও বিস্তারিতভাবে তুলে ধরবেন বলে আশা প্রকাষ করেছে ।

মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) দেয়া এক বিবৃতিতে টিআইবি বলেছে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার প্রেস ব্রিফিংয়ে টিকা বাবদ সরকারের ব্যয় ৪০ হাজার কোটি টাকা নয়, প্রায় ২০ হাজার কোটি বলে উল্লেখ করেছেন; যা একদিকে তার আগের ঘোষণার সংশোধন এবং অন্যদিকে বাস্তবে টিআইবির বিশ্লেষণকেই যথার্থতা প্রদান করে।

টিআইবির প্রতিবেদন অনুযায়ী টিকার ক্রয়মূল্য ও টিকা কার্যক্রমের প্রাক্কলিত মোট ব্যয় ১২,৯৯৩- ১৬,৭২১ কোটি টাকা, যা স্বাস্থ্যমন্ত্রী ঘোষিত ৪০ হাজার কোটির অর্ধেকের কম। ভুল বোঝাবুঝির কারণে এই খরচ পূর্বে ৪০ হাজার কোটি টাকা প্রকাশ হয়েছিল বলেও মন্ত্রী সংবাদ ব্রিফিংয়ে উল্লেখ করেছেন। তবে তিনি আরো উল্লেখ করেছেন যে, অনুদান হিসেবে যে টিকা বাংলাদেশ পেয়েছে তার মূল্য যোগ করে তিনি মোট খরচ ৪০ হাজার কোটি উল্লেখ করেছিলেন। বিনামূল্যে অনুদান হিসেবে পাওয়া টিকা বাবদ কোন যুক্তিতে ও কিসের ভিত্তিতে মূল্য নির্ধারণ করা হলো এবং কোন যুক্তিতে তা খরচ হিসেবে বিবেচিত হলো তা বোধগম্য নয়। টিআইবি টিকা সংক্রান্ত খরচ পূনরায় সঠিকভাবে তুলে ধরার আহ্বাণ জানিয়েছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রমকে সুশাসনের আঙ্গিকে পর্যালোচনা করা এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে অধিপরামর্শমূলক কার্যক্রম পরিচালনার উদ্দেশ্যে ধারাবাহিকভাবে তিনটি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এর ধারাবাহিকতায় টিআইবি গত ১২ এপ্রিল ‘‘করোনা ভাইরাস সংকট মোকাবিলায় সুশাসন: অন্তর্ভুক্তি ও স্বচ্ছতার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। টিআইবি প্রকাশিত এই গবেষণা প্রতিবেদনের প্রতিবাদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গত ২৫ এপ্রিল দুপুর ১২ টায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত একটি প্রেস ব্রিফিং-এ গবেষণা বিষয়ে কিছু মন্তব্য করেছেন। মন্ত্রী যেভাবে প্রতিবেদনটিকে গুরুত্ব দিয়েছেন তার জন্য টিআইবির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই।

কোভিড সংকট মোকাবিলায় সরকারের অর্জন বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে টিআইবির ব্যাখ্যা: টিআইবি করোনা সংকট মোকাবিলায় সরকারের ইতিবাচক অর্জনসমূহ এর ধারাবহিক গবেষণাসমূহে যথাযথ গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরেছে, যা এই পর্বের গবেষণায়ও উল্লেখ করা হয়েছে।

টিআইবি দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে জনগুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন খাত ও প্রতিষ্ঠান নিয়ে গবেষণা ও অধিপরামর্শমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। যার মূল উদ্দেশ্য, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সরকারের সহায়ক ভূমিকা পালন করা। ফলে টিআইবি’র বিরুদ্ধে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা বা দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করা, দেশের কোনো সফলতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ইত্যাদি অভিযোগ আনার কোনো সুযোগ নেই।

মন্ত্রীর ব্রিফিংয়ে তিনি অন্য যেসব বিষয়ে টিআইবির প্রতিবেদনের সাথে দ্বিমত প্রকাশ করেছেন, সে সম্পর্কে বিস্তারিত বিশ্লেষণসহ টিআইবি মন্ত্রীর সম্মতি সাপেক্ষে তার সাথে সরাসরি আলোচনা করার উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

টিআইবির প্রতিবেদনকে সঠিক নয় ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” আখ্যায়িত না করে বরং টিআইবি কর্তৃক চিহ্নিত ঘাটতিসমূহকে দূর করা এবং সুপারিশকৃত বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমেই অতিমারী নিয়ন্ত্রণে অধিকতর কার্যকর ভ‚মিকা রাখা সম্ভব। টিআইবি’র কোভিড-১৯ সংক্রান্ত কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য সরকারের গৃহীত ব্যবস্থা ও কার্যক্রমকে কীভাবে আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করা যায় সে বিষয়ে গবেষণাধর্মী বিশ্লেষণের মাধ্যমে সরকারকে সহায়তা করা। তাই টিআইবি আশা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গবেষণায় উল্লিখিত ফলাফলকে নিরপেক্ষ ও নৈর্ব্যক্তিক দৃষ্টিতে গ্রহণ করে তাদের সক্ষমতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধিতে মনোনিবেশ করবেন যেন কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগগুলো সফল হয়।

Related posts

হাছান মাহমুদের পরিবারের দখলে থাকা বন বিভাগের জমি উদ্ধার, হচ্ছে মামলা

News Desk

এনআইডি না থাকলেও বয়স্কদের টিকা

News Desk

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীকে লিগ্যাল নোটিশ

News Desk

Leave a Comment