মুন্সীগঞ্জে ভিড়ছে না লঞ্চ, যাত্রীদের চরম ভোগান্তি 
বাংলাদেশ

মুন্সীগঞ্জে ভিড়ছে না লঞ্চ, যাত্রীদের চরম ভোগান্তি 

৩৩ দিন বন্ধ থাকার পর গত শনিবার (২৩ এপ্রিল) মুন্সীগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ নৌরুটে শুরু হয়েছে ছোট লঞ্চ চলাচল। এর আগে গত ২০ মার্চ থেকে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চডুবির ঘটনার পর নৌরুটে সব ধরনের ছোট লঞ্চ চলাচল স্থায়ীভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয় বিআইডব্লিউটিএ। তবে নতুন করে চলাচল শুরু হলেও মুন্সীগঞ্জ ঘাট না ধরে লঞ্চগুলো আসা-যাওয়া করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

বিআইডব্লিউটিএ’র তথ্য অনুযায়ী ৭ শর্ত মেনে নারায়ণগঞ্জ থেকে চাঁদপুর, রামচন্দ্রপুর, নড়িয়া, মতলব ও মুন্সীগঞ্জ নৌরুটে চলাচলের পুনরায় রুট পারমিট দেওয়া হয় ১৮ লঞ্চকে। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-চাঁদপুর নৌরুটে চলবে ১৩ টি, নারায়ণগঞ্জ-রামচন্দ্রপুর দুটি, নারায়ণগঞ্জ-নড়িয়া রুটে একটি লঞ্চ চলাচল করবে। নারায়ণগঞ্জ-মতলব নৌরুটে ও মুন্সীগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ রুটে একটি করে লঞ্চ চলাচলের অনুমতি মিলেছে। মুন্সীগঞ্জ ঘাটের একমাত্র লঞ্চ দারাশিকোসহ চাঁদপুর-মুন্সীগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জের নৌরুটের লঞ্চগুলোকে মুন্সীগঞ্জ ঘাট ধরে চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এই রুটের যাত্রীদের নির্বিঘ্নে যাতায়াতের জন্য বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এ. এস. টি শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত নামের একটি সি ট্রাক চালু করে। তবে ইঞ্জিনে ত্রুটির কারণে চলাচল বন্ধ রয়েছে নৌযানটির।

তবে বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) বিকালে সরেজমিন মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা যায় ঘাটের ভিন্ন চিত্র। চাঁদপুর থেকে নারায়ণগঞ্জগামী লঞ্চগুলো মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে নোঙর করছে না। ঘাটে যাত্রীরা  অপেক্ষা করলেও লঞ্চ না ভেড়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। ঈদ যাত্রায় এই হয়রানি দ্বিগুণ বেড়েছে। এতে  যাত্রীদের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

নারায়ণগঞ্জগামী যাত্রী ফোরকান সরকার ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, চোখের সামনে দিয়ে লঞ্চগুলো চাঁদপুর  থেকে নারায়ণগঞ্জে চলে যাচ্ছে। আর আমরা মুন্সীগঞ্জ ঘাটে বসে সময় নষ্ট করছি। ঘাটে এসে যদি লঞ্চ না পাই, তাহলে তামাশার নির্দেশনার দরকার কি?

ভোগান্তির শিকার আরেক যাত্রী সিনথিয়া বলেন, কেনাকাটার জন্য নারায়ণগঞ্জে যাবো। এসে শুনলাম দারাশিকো লঞ্চ ছেড়ে গেছে। তারপর থেকে ঘাটে আর লঞ্চ ভিড়ছে না। তাই মুক্তারপুর হয়ে নারায়নগঞ্জে যেতে বাধ্য হচ্ছি।  

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ফোরকান হোসেন বলেন, সি ট্রাক চালু হলেও খুব একটা আগ্রহ ছিল না যাত্রীদের। এখন বন্ধ হয়ে গেছে তাতেও মানুষের কোনও খোঁজ নেই। দুর্ঘটনার পর লঞ্চ সার্ভিস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মানুষ সড়কপথে চলাচল শুরু করেছে। এখন এই নৌপথে বড় বড় লঞ্চ যদি চালু না করে তবে যাত্রীদের ভোগান্তি কমবে না।

এ বিষয়ে লঞ্চঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর রাজিব চন্দ্র রায় বলেন, ১৮ লঞ্চের মধ্যে মাত্র দুটি লঞ্চ মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে ভিড়ছে। বাকিগুলো আসছে না। এ বিষয়ে আমি রিপোর্ট করেছি। পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। 

মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটের ইজারাদার দ্বীল মোহাম্মদ কোম্পানি বলেন, রুটপারমিট দেওয়ার পর সময়সূচি অনুযায়ী মুন্সীগঞ্জ- নারায়ণগঞ্জ নৌরুটে দারাশিকো লঞ্চটি যাত্রী পরিবহন করেছে। দিনে দুই ট্রিপ দিচ্ছে। যদি চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জের বাকি লঞ্চগুলো ঘাটে ভিড়তো তাহলে যাত্রীদের ভোগান্তি কমতো।

Source link

Related posts

আলুক্ষেত নিয়ে দুশ্চিন্তায় চাষিরা

News Desk

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির কমিটি গঠিত

News Desk

টেকনাফে পাঁচ হাজার ইয়াবাসহ মাদক কারবারী আটক

News Desk

Leave a Comment