১৬৩ জন হুথি যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দেবে সৌদি জোট। সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা এপিএ’র বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
এসপিএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা সংস্থা রেডক্রসের তত্ত্বাবধানে এই যুদ্ধবন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে তাদের মুক্তিদান বিষয়ক দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এর আগে গত ২৫ এপ্রিল মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সৌদি জোটের ২০০ যুদ্ধবন্দিকে মুক্তির ঘোষণা দিয়েছিল হুথি বিদ্রোহীগোষ্ঠী। তার তিন দিনের মধ্যেই এই হুথি যুদ্ধবন্দিদের মুক্তি দিল সৌদি জোট।
২০১৫ সালের শুরুর দিকে ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের হামলার মুখে সৌদি-সমর্থিত ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদি ক্ষমতা ছেড়ে সৌদি আরবে পালিয়ে যান। ক্ষমতাচ্যুত এই প্রেসিডেন্টকে ফেরাতে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে।
কিন্তু এই অভিযানের শুরুর পর ইয়েমেনের রাজনৈতিক সংকটের অবসানের পরিবর্তে আরও তীব্র হয়ে ওঠে। বর্তমানে ইয়েমেনে কার্যত দুই শাসকগোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সামরিক সহযোগিতার ওপর ভর করে দেশটির দক্ষিণাঞ্চল এখনও মনসুর হাদির নেতৃত্বাধীন সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে, অন্যদিকে উত্তরাঞ্চল সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে হুথি বিদ্রোহীরা।
ইয়েমেনের এই সংঘাতকে মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্যের লড়াইয়ে সৌদি-ইরানের ছায়াযুদ্ধ হিসেবে দেখা হয়। টানা গৃহযুদ্ধ ও সংঘাত চলার ফলে প্রায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ এবং একদা স্বচ্ছল এই দেশটি। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়েমেনের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ খাদ্য ও ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের গুরুতর সংকটে ভুগছেন।
জাতিসংঘের উদ্যোগে গত মাসে ইয়েমেনে যুদ্ধরত হুথি বিদ্রোহীগোষ্ঠী ও সৌদি-আমিরাত জোটের মধ্যে বন্দি বিনিময় সম্পর্কিত আলোচনা শুরু হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত উভয়পক্ষের মধ্যে কোনো চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি।
যদি এই চুক্তি সাক্ষরিত হয়, সেক্ষেত্রে সৌদি-আমিরাত জোটের হাতে বন্দি প্রায় ১ হাজার ৪০০ জন হুথি এবং ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আব্দ-রাব্বু মনসুর হাদির ভাইসহ হুথি বিদ্রোহীদের হাতে বন্দি ৮২৩ জন সৌদি ও আমিরাতের নাগরিকের মুক্তির দুয়ার খুলবে।
পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে চলতি এপ্রিল মাসের শুরু থেকে যুদ্ধবিরতি চলছে হুথি বিদ্রোহী ও সৌদি-আমিরাত সামরিক জোটের মধ্যে।