বিরিহাটের আকর্ষণ চাঁদপুরের ‘রাজা’
বাংলাদেশ

বিরিহাটের আকর্ষণ চাঁদপুরের ‘রাজা’

চট্টগ্রামে জমতে শুরু করেছে পশুর হাট। গত কয়েক দিনের তুলনায় বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) সব হাটেই ক্রেতা সমাগম বেশ ভালো। সকাল থেকে বেড়েছে বিক্রিও। চট্টগ্রামের বিভিন্ন পশুর হাটে স্থানীয়ভাবে খামারে পালন করা পশুর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকেও আনা হয়েছে প্রচুর গরু। এখনও ট্রাকে ট্রাকে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসছে গরু-মহিষ। তবে ক্রেতাদের কাছে চাহিদার শীর্ষে রয়েছে স্থানীয়ভাবে কৃষকের পালন করা গরু।

নগরীতে এবার তিনটি স্থায়ী এবং চারটি অস্থায়ী পশুর হাট বসেছে। এর বাইরে ১৫টি উপজেলার মধ্যে একাধিক স্থায়ী ও অস্থায়ী কোরবানির হাটে বিক্রি হচ্ছে পশু। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের তথ্যমতে এবার আট লাখের মতো গবাদি পশু কোরবানি হবে।

পশু বেচা-কেনা ধীরে ধীরে জমে উঠছে চট্টগ্রামের শতবর্ষী বিবিরহাটে। বিগত বছরগুলোর তুলনার এবার এ বাজারে পশুর সংখ্যা অনেক কম। তবে বাজার কর্তৃপক্ষ আশাবাদী, আগামী দিনগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতায় ভরপুরে গয়ে উঠবে ঐতিহ্যবাহী এ বাজার। এবার বাজারকে ঘিরে খুঁটি বাণিজ্যের অভিযোগ তুলেছেন বিক্রেতারা। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন বলছেন, অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বিবিরহাট বাজারে ক্রেতাদের আকর্ষণ বাড়িয়েছে ২০ মন ওজনের ‘রাজা’। বিশাল দেহের এ গরুটা বিক্রির জন্য আনা হয়েছে চাঁদপুর থেকে। ‘রাজা’র দাম চাওয়া হয়েছে ছয় লাখ। তবে পাঁচ লাখ পেলে গরু ছেড়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন মালিক মো. হারুন।

তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এ গরুটি চাঁদপুর এসবি ফার্মে বেড়ে উঠেছে। এ গরুর বয়স এখন ছয় বছর। রবিবার বিবিরহাট বাজারে বিক্রির জন্য চারটি গরু আনা হয়েছিল। এরমধ্যে একটি বিক্রি করা হয়েছে। রাজাসহ আরও তিনটি গরু বিক্রির জন্য আছে।

বিবিরহাটের গরু বিক্রেতা মো. মনসুর অভিযোগ করেন, ফরিদপুর থেকে ১৫টি গরু নিয়ে গত রবিবার বিবিরহাট বাজারে বিক্রির জন্য এনেছি। এখন পর্যন্ত একটি গরুও বিক্রি করতে পারিনি। বাজারে গরু আনার পর ১৫টি গরুর জন্য খুঁটি ভাড়া দিতে হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। গাড়ি ভাড়া দিতে হয়েছে ৩০ হাজার। এসব গরু দেখার জন্য রাখা হয়েছে পাঁচ জন কর্মচারি। তবে এখন পর্যন্ত বাজারে আশানুরূপ ক্রেতা নেই। ফরিদুপর থেকে চট্টগ্রামে বিক্রির জন্য আনা প্রতি গরুতে ১০ হাজার টাকা খরচ পড়ে। এ টাকা যোগ করে গরু বিক্রি করতে হয় বলে জানান তিনি। 

বিবিরহাট বাজার ইজারাদার মো. মহসীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বাজারে কয়েক হাজার গরু আছে। সুশৃঙ্খলভাবে বাজার পরিচালনা করা হচ্ছে। নিয়মের বাইরে গিয়ে কোন বাণিজ্য হচ্ছে না।

পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদেকুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিবিরহাট বাজারে খুঁটি বাণিজ্য হচ্ছে এ ধরনের কোনও অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এদিকে নগরীর সাগরিকা গরুর বাজার, পোস্তার পাড় ছাগলের বাজার, সল্টগোলা রেলক্রসিং সংলগ্ন বাজার, বাটার ফ্লাই পার্কের দক্ষিণ পাশে টিকে গ্রুপের খালি মাঠের পশুর বাজার ও মইজ্যারটেক সিডিএ আবাসিক মাঠ এলাকার পশুর বাজারে দিন দিন বাড়ছে ক্রেতার সমাগম।

সাগরিকা পশুর বাজারের ইজারাদার আকবর হোসেন বলেন, এ বাজারে এবার অনেক পশু আছে। ছোট, বড় ও মাজারি আকারের পশু রয়েছে। কয়েক দিনের তুলনায় এখন ক্রেতা বাড়ছে। বাড়ছে পশু বিক্রি। এখনও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এ বাজারে পশু আসছে। এবার পশুর সংকট হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

রবিউল হোসেন নামে সাগরিকা বাজারে আসা এক ক্রেতা বলেন, শহরে ভাড়া বাসায় থাকি। সেখানে রাখার স্থান নেই। আগে গরু কিনলে এটি আবার লালন-পালন করতে হবে। এ কারণে কোরবানির দুই-এক দিন আগে গরু কিনবো। এখন গরুর দাম কেমন তা দেখতে এসেছি।

 

Source link

Related posts

ভবন নির্মাণে ‘নিম্নমানের উপকরণ’, ধসে পড়ল ভূমি অফিস

News Desk

খরস্রোতা সুখদহ নদী এখন মরা খাল

News Desk

দীর্ঘ বন্যার কবলে কুড়িগ্রাম, মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা

News Desk

Leave a Comment