প্রেমের টানে এসে সুখে সংসার করছেন নেপালী তরুণী 
বাংলাদেশ

প্রেমের টানে এসে সুখে সংসার করছেন নেপালী তরুণী 

প্রেমের টানে বাংলাদেশে এসে সুখের সংসার পেতেছেন নেপালী তরুণী সানজু কুমারী খাত্রী। বাঙালিদের মতোই এখন তার চলাফেরা, খাবার ও পোশাক। এমনকি বাংলা ভাষায় সাবলীলভাবে কথাও বলছেন তিনি। টাঙ্গাইলের খীপুর উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের গৃহবধূ সানজু স্বামী-সংসারে জন্য ছেড়েছেন পরিবার-পরিজন এবং ধর্ম। বিয়ের সময় ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী নেপালী তরুণীর বর্তমান নাম খাদিজা আক্তার। স্বামী প্রবাসে থাকায় শ্বশুর-শাশুড়ি আর একমাত্র শিশু কন্যাকে নিয়েই কাটছে তার সময়। 

স্থানীয়রা জানান, ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি নেপালী ওই তরুণী টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা হুমায়ুন আলীর মালয়েশিয়া প্রবাসী যুবক নাজমুল ইসলামের কাছে ছুটে আসেন। সম্প্রতি ওই বাড়িতে গিয়ে প্রেম ও সংসার জীবন নিয়ে কথা হয় সানজুর সঙ্গে। এ সময় সুখেই সংসার করছেন বলে জানা তিনি।  

তিনি বলেন, আমার বাড়ি নেপালের কাঠমান্ডু শহরে। বাবার নাম দমর বাহাদুর খাত্রী। তিন বোনের মধ্যে আমি দ্বিতীয়। তবে বাংলাদেশি যুবককে বিয়ে করে ধর্ম পরিবর্তন করে এখন আমার নাম খাদিজা আক্তার।

নাজমুলের সঙ্গে প্রেম ও বিয়ে বিষয়ে তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় একই কোম্পানিতে কাজ করার সময় নাজমুলের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় তিন বছর প্রেমের সম্পর্কের পর ২০১৯ সালের শেষের দিকে মালয়েশিয়া থেকে আমি নিজ দেশে ফিরি। পরে নাজমুলও বাংলাদেশে ফেরেন। এরপর নামজুল তার এক আত্মীয়কে নিয়ে নেপালে আমার বাড়িতে এসে পরিবারের কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। পরিবারকে রাজি করিয়ে ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি আমাকে নিয়ে বাংলাদেশে ফেরে নাজমুল। পরে টাঙ্গাইলে আদালতের মাধ্যমে কোর্ট ম্যারেজসহ স্থানীয় নিকাহ রেজিস্ট্রার দিয়ে বিবাহ সম্পন্ন করা হয়। ওই সময় আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করি। আমার নতুন নাম খাদিজা আক্তার। 

তিনি আরও জানান, বিয়ের কিছুদিন পর সানজু নিজ দেশে ফিরে যান। সেখানে কিছুদিন থাকার পর আবার স্বামীর কাছে বাংলাদেশে চলে আসেন। কিছুদিন সংসারের পর নাজমুল মা-বাবার কাছে তাকে রেখে ফিরে যান মালয়েশিয়ায়।

সানজু বলেন, স্বামী মালয়েশিয়া যাওয়ার পর থেকে শ্বশুর-শাশুড়ি, ননদ ও একমাত্র মেয়ে তাসফিয়া ইসলাম নূরকে নিয়েই সময় কাটছে। এছাড়া নেপালে আমার মা ও দুই বোনসহ আত্মীয় স্বজন রয়েছে। তাদের সঙ্গেও নিয়মিত ভিডিও কলে কথা হয়।

সানজুর শ্বশুর হুমায়ুন আলী বলেন, ‘নেপালী মেয়েকে পুত্রবধূ হিসেবে পেয়ে আমি আনন্দিত। আমার ছেলের বউ এখন বাংলায় কথা বলতে পারে। বাঙালি মেয়েদের মতোই তার চলাফেরা। নেপালে তার মা ও দুই বোন রয়েছে। তাদের সঙ্গে আমরাও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। তার কোনও সমস্যা হচ্ছে না। সব কিছু স্বাভাবিকভাবেই চলছে। তবে মজার বিষয় হলো বিয়ের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও তাকে দেখার জন্য অনেকেই বাড়িতে আসেন।’

মোবাইলফোনে কথা হয় নাজমুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সানজুকে স্ত্রী হিসেবে পেয়ে আমি অনেক খুশি। সানজু এখনও আপাদমস্তক বাঙালি। এছাড়া কোরআন পড়ে, পর্দা করে। বাঙালি নারীদের মতোই সংসার সামলাচ্ছে। আমরা একমাত্র মেয়েকে নিয়ে সামনের দিনের স্বপ্ন বুনছি।’

 

Source link

Related posts

ডা. কাজেম হত্যা: আসামিদের গ্রেফতারে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম চিকিৎসকদের

News Desk

রাজধানীতে শপিংমল ও দোকানপাট খোলার সময় বাড়ল

News Desk

কঠোর লকডাউনে সুফল মেলেনি, সামনে মহাবিপদ!

News Desk

Leave a Comment