অবশেষে আক্ষেপ পূরণ হলো সানজিদার। ইতিহাস গড়া ফাইনালের আগে ছাদখোলা বাসের আক্ষেপ করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন বাংলাদশের এই মিডফিল্ড তারকা। তার সেই আক্ষেপ পূরণ করে সাফের শিরোপা নিয়ে ছাদখোলা চ্যাম্পিয়ন বাসেই রাজধানীর রাস্তায় শুরু হলো চ্যাম্পিয়ন যাত্রা।
স্বপ্নটা দেখিয়েছিলেন বাংলার মানুষকে। ওরা কথা রেখেছে, স্বপ্ন দেখিয়ে সেই স্বপ্ন সত্যি করে ছিনিয়ে এনেছে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট। দেশের মানুষের স্বপ্ন পূরণের কথা দিয়ে ওরা জানিয়েছিলো নিজেদের আক্ষেপের কথাও।
ফাইনালের আগে আফসোস প্রকাশ করেই সানজিদা তার ফেসবুকে লিখেছিলো, ‘ছাদখোলা চ্যাম্পিয়ন বাসে ট্রফি নিয়ে না দাঁড়ালেও চলবে, সমাজের টিপ্পনী কে একপাশে রেখে যে মানুষগুলো আমাদের সবুজ ঘাস ছোঁয়াতে সাহায্য করেছে, তাদের জন্য এটি জিততে চাই। ‘
সানজিদার ওই এক লাইনেই ঝড় উঠেছে দেশের মানুষের হৃদয়ে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আপামর জনসাধারণও এই মেয়েদের জন্য ছাদখোলা বাসের দাবি জানিয়েছিলো।
সানজিদার ওই ফেসবুক পোস্ট চোখে পড়েছিলো যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের। পরে মন্ত্রণালয় আর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) যৌথ প্রচেষ্টায় একদিনের ভেতরেই সানজিদাদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ছাদখোলা চ্যাম্পিয়ন বাস। বিআরটিসির একটি ডাবল ডেকার বাসের ছাদের অংশ কেটে ফেলে, সেই বাসটিকেই চ্যাম্পিয়নদের ছবিতে মুড়িয়ে তৈরি হয়েছে সানজিদাদের স্বপ্নের চ্যাম্পিয়ন বাস।
সানজিদারা নেপাল থেকে ফেরার আগেই তাদের জন্য তৈরি হওয়া ছাদখোলা বাসের খবর পেয়ে গেছে। তারাও অপেক্ষায় ছিলো কখন দেশে ফিরে কখন চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিয়ে সেই ছাদখোলা বাসে চ্যাম্পিয়ন যাত্রা করবে।
অবশেষে ফুরিয়েছে সানজিদার অপেক্ষা। নিজেদের কাঙ্ক্ষিত ছাদখোলা বাসে সানজিদারা শুরু করেছে চ্যাম্পিয়ন যাত্রা। ঢাকার সড়কের দুপাশে অগনিত জনতা তাদের বরণ করে নিয়েছে ফুলেল শুভেচ্ছায়।
অপেক্ষা ফুরিয়েছে ফুটবল পাগল বাঙালি জনতারও । দেশের মাটিতে পা রেখেছে ইতিহাস গড়ে সাফের শিরোপা জেতা সাবিনা-সানজিদারা পেয়েছে অগণিত ভক্ত সমর্থকদের শুভেচ্ছা। বিমানবন্দরের এলাকাতে ঢল নেমেছে সাধারণ জনতার।
চ্যাম্পিয়ন যাত্রার আগে বিমানবন্দরে তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। বিমানবন্দরে নেমেই অধিনায়ক সাবিনা খাতুনকে দিয়ে কেক কেটে সোনার মেয়েদের বরণ করে নেন বাংলাদেশ সরকারের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। মিষ্টি আর ফুলের শুভেচ্ছার সঙ্গে বরণ করা হয় সানজিদাদের।
দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন আর বাফুফের নারী উইংইয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণকেও শুভেচ্ছা জানানো হয় এসময়।
এসময় বিমানবন্দরে আরও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কর্মকর্তারা। এরপর সেখানেই রয়েছে সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলন।
এরপরও শুরু হয়েছে সানজিদাদের চ্যাম্পিয়ন যাত্রা। ছাদখোলা বাসে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন সাবিনা-সানজিদারা।
বিমানবন্দর থেকে কাকলী-জাহাঙ্গীর গেট- পিএম অফিস-বিজয় সরণি- ফকিরাপুল হয়ে বাফুফে ভবন পৌঁছাবে সানজিদাদের চ্যাম্পিয়ন বাস।
চ্যাম্পিয়ন যাত্রা শেষে মতিঝিলে বাফুফে কার্যালয়ে পৌঁছালে সেখানে এই সোনার মেয়েদের অভ্যর্থনা জানাবেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।