ব্রুনেইয়ের সুলতান হাজি হাসানাল বলকিয়াহ মুইজ্জাদ্দিন ওয়াদ্দৌলাহ রাষ্ট্রীয় সফরে আজ শনিবার ঢাকায় আসছেন। ২১ বার তোপধ্বনি ও লাল গালিচার মাধ্যমে ব্রুনেইয়ের সুলতানকে স্বাগত জানাবে বাংলাদেশ। ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ব্রুনেইয়ের সুলতানকে অভ্যর্থনা জানাবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তাঁর এই সফরে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বিমান চলাচল, বাংলাদেশি জনশক্তি নিয়োগ এবং দুই দেশের নাবিকদের সনদকে পারস্পরিক স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে তিনটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হতে পারে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্রুনেইয়ের সুলতানের সফরসূচিতে কিছু পরিবর্তন হতে পারে। তিন দিনের সফরের পরিকল্পনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সফর হতে পারে দুই দিনের। ব্রুনেইয়ের রাজপরিবারের সদস্য, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ব্রুনেইয়ের সুলতানের সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন।
হাজি হাসানাল বলকিয়াহ ৫৫ বছর ধরে ব্রুনেইয়ের সুলতান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমান বিশ্বে তিনিই সবচেয়ে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালনকারী সুলতান। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে এই প্রথম ব্রুনেইয়ের সুলতান ঢাকা সফরে আসছেন। সফরকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী বীর শহীদদের প্রতি তাঁর সম্মান জানানোর কথা রয়েছে। এ ছাড়া তিনি ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন ও জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন।
রাষ্ট্রপতি ব্রুনেইয়ের সুলতানের সম্মানে রাষ্ট্রীয় নৈশ ভোজের আয়োজন করেছেন। সুলতান হাজি হাসানাল বলকিয়াহ আগামীকাল রবিবার ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন। সেই বৈঠকে তিনটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হতে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সন্ত্রাস ও চরমপন্থা, মাদক ও মানবপাচার, পরিবেশ সংরক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য দূরীকরণ, টেকসই উন্নয়নসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে বাংলাদেশ ও ব্রুনেই অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে থাকে। দুই দেশ জাতিসংঘ, ওআইসি ও এআরএফ, কমনওয়েলথসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় ফোরামে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যাসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী এবং ব্রুনেইয়ের সুলতানের মধ্যে আরো আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া এ সফর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সংগঠন আসিয়ানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়ন ও আসিয়ানের ‘সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’ হওয়ার বিষয়টি আরো গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি করবে।