করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ন্ত্রণে ইতিহাসের বৃহত্তম টিকাদান কর্মসূচি আশার সঞ্চার করলেও অনেকে হতাশ হয়ে পড়ছেন। তাদের এই হতাশার নেপথ্যে রয়েছে টিকা নেওয়ার পরও ফের করোনায় আক্রান্ত এবং বিরল কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঘটনা। ফলে খুব সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠছে— তাহলে কী আবিষ্কার হওয়া ভ্যাকসিনগুলো করোনা ঠেকাতে যথেষ্ট কার্যকর নয়?
সময়ের সঙ্গে চরিত্রে বদল ঘটছে করোনাভাইরাসের, তা হয়ে উঠছে আগের চেয়ে অনেক বেশি বিধ্বংসী। এই জায়গা থেকে এর আগেই তৈরি হয়েছিল সংশয়— নতুন ধরনের সংক্রমণ পুরোনো ধারার ওপর ভিত্তি করে তৈরি ভ্যাকসিন ঠেকাতে পারবে কি না! তবে বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই সন্দেহ অমূলক। ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ঠিক আছে। তাই যদি হয়, তাহলে ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও কেন আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে?
এই প্রসঙ্গে মার্কিন বিজ্ঞানী ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজের বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউসি সম্প্রতি হোয়াইট হাউসের এক অধিবেশনে বলেছেন, বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে কয়েকজনের ভ্যাকসিন নিয়েও সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা মোটেও অস্বাভাবিক নয়। বরং তাকে নিয়মের মধ্যেই ধরতে হবে।
যদি ভ্যাকসিন সেন্টারে ভ্যাকসিন ঠিক মতো সংরক্ষণ করা না হয়, তাহলে তার কার্যকারিতা কমবে। আবার যদি হাতের সঠিক জায়গায় প্রয়োগ না করা হয়, তাহলেও ভ্যাকসিন ঠিকঠাক কাজে আসবে না। এই দুই ব্যাপার যেমন ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও অনেক ব্যক্তিকে সংক্রমণের মুখে ফেলছে, তেমনই রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অত্যধিক দুর্বল হলেও যে ভ্যাকসিন কাজে আসবে না সেটাও উল্লেখ করছেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীরা ভ্যাকসিন ডোজ নেওয়ার সময়ের ব্যবধানের কথাও তুলছেন। তারা বলছেন, দ্বিতীয় ডোজটি নেওয়ার দুই সপ্তাহ পরই শরীরকে ভাইরাস মোকাবিলার জন্য পুরোপুরিভাবে সক্ষম করে তোলে ভ্যাকসিন। ফলে ভ্যাকসিন নিলেও সংক্রমিত হওয়ার বিচ্ছিন্ন খবর আসবেই!
তবে এই প্রসঙ্গে ভ্যাকসিন নিতে একবারও বারণ করছেন না বিজ্ঞানীরা। এমনকি আক্রান্ত চিকিৎসকরাও বলছেন, ভ্যাকসিন নেওয়া জরুরি। যদি তার পরও সংক্রমণ হয়, সেক্ষেত্রে বেশিরভাগ ঘটনায় উপসর্গ মৃদু হবে বা একেবারেই থাকবে না। ফলে শেষ পর্যন্ত যে জীবন বাঁচবে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই।