রক্তের ক্যানসার লিউকেমিয়া সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এ রোগে আক্রান্ত শিশুদের ছবি নিয়ে রাজধানীর বনানীতে শুরু হয়েছে ফারহানা সেতুর একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘অঙ্কুর’। এশিয়াটিক সেন্টারে অভিনেতা আলী যাকেরের স্মৃতিবিজড়িত ‘বাতিঘর: স্মৃতিতে স্মরণে আলী যাকের’-এ আয়োজনটি করেছে মঙ্গলদীপ ফাউন্ডেশন।
রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রদর্শনীর বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এশিয়াটিক থ্রি সিক্সটি গ্রুপের চেয়ারম্যান, মঙ্গলদীপ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, সংসদ সদস্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর, মঙ্গলদীপ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অভিনেতা ইরেশ যাকের, আলোকচিত্রী ফারহানা সেতু, লিউকেমিয়ার চিকিৎসক রুমানা দৌলা প্রমুখ।
আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘আলী যাকের ক্যানসারের কাছে হেরে গিয়েছিলেন। তিনি একদিকে ছিলেন বিজ্ঞাপনের জগতের দিকপাল, অন্যদিকে দর্শনীর বিনিময়ে মঞ্চনাটকের পথিকৃৎ। গ্রামগঞ্জে ঘুরে বেড়ানো, বুনো ফুলের ছবি তোলা ছিল তাঁর নেশা। তাঁকে নানাভাবে নানা রূপে আমরা দেখেছি। এত কিছুর ভেতর দিয়ে যে মানুষটা যেখানে সবচেয়ে বড় হয়ে ওঠেন, সেটি হচ্ছে একজন মুক্তিযোদ্ধা আলী যাকের। এই দেশ এবং দেশের মানুষকে তিনি খুব ভালোবাসতেন। তিনি সব সময় সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা কিছু কাজ করার চেষ্টা করছি। মঙ্গলদীপ ফাউন্ডেশন তৈরির মূল উদ্দেশ্য সাংস্কৃতিক ও মানবহিতৈষী বিভিন্ন কাজে যুক্ত থাকা। আজকের প্রদর্শনী সেগুলোর অন্যতম।’
রুমানা দৌলা বলেন, ‘যে শিশুদের ছবি তোলা হয়েছে, তাদের প্রায় ৯৮ শতাংশই মারা গেছে। চিকিৎসক হিসেবে আমি দেখেছি, পিজি হাসপাতালে দেশের নানা প্রান্ত থেকে রোগী এসে চিকিৎসা নিচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জেনেছি, এই শিশুদের ৫০ শতাংশ চিকিৎসাও নিতে পারে না। এখানে আসনসংখ্যাও মাত্র ৩১। এগুলো বাড়ানো দরকার। উন্নত দেশগুলোতে মানুষ এ রোগের ব্যাপারে সচেতন। লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৯৫ ভাগই সুস্থ হয়ে যাওয়ার কথা। এ রোগের ব্যাপারে সচেতনতা আর চিকিৎসার সুযোগ সৃষ্টি করা দরকার।’
প্রদর্শনীর ব্যাপারে ইরেশ যাকের বলেন, ‘আলী যাকের ছবি তুলতে ভালোবাসতেন। তিনি চাইতেন, প্রতিভাবান তরুণ-তরুণীরা এক জায়গায় জড়ো হোক, শিল্পচর্চা করুক। বাতিঘর ছিল তাঁর অফিস। এটিকেই এখন গ্যালারি বানানো হয়েছে। বাতিঘরে প্রথম আলোকচিত্রী প্রদর্শনী এটি। বাংলাদেশ কিংবা ঢাকা শহরে এখন নতুন এবং সম্ভাবনাময় শিল্পী, যেমন আলোকচিত্রী বা ভাস্করদের স্বল্প বা বিনা খরচে নিজেদের কাজ সবার সামনে তুলে ধরার সুযোগ নেই। বাতিঘরে উন্মুক্ত গ্যালারি করার পেছনে আমাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল, তরুণ এবং প্রতিভাবান শিল্পীদের জন্য সুযোগ নিশ্চিত করা। আশা করছি ভবিষ্যতে তরুণ ও প্রতিভাবান শিল্পীদের দক্ষতা তুলে ধরতে আরও কিছু আয়োজন করতে পারব।’