ভেটেরিনারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেন ওষুধের দোকানের কর্মচারীও!
বাংলাদেশ

ভেটেরিনারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেন ওষুধের দোকানের কর্মচারীও!

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে রাজস্ব খাতের ১০টি পদের মধ্যে আটটিই শূন্য। বহিরাগতদের দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। এমনকি সম্প্রতি হাসপাতালটিতে গিয়ে স্থানীয় এক ওষুধের দোকানের কর্মচারীকেও চিকিৎসা সেবায় সহায়তা করতে দেখা গেছে। যদিও বিষয়টি স্বীকার করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে লোকবল সংকটে চিকিৎসাসেবা ব্যহত হচ্ছে স্বীকার করে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শিগগিরই শূন্য পদগুলোতে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা যোগদান করবেন। তখন চিকিৎসা সেবায় আর কোনও সমস্যা থাকবে না। 

গোয়ালন্দের গ্রামগঞ্জের গবাদি পশু পালনকারী ক্ষুদ্র খামারিদের অভিযোগ, গবাদি পশু কোনও রোগে আক্রান্ত হলে বারবার ফোন করেও হাসপাতাল থেকে কোনও চিকিৎসককে পাওয়া যায় না। এমনকি হাসপাতালে গিয়েও কোনও চিকিৎসককে পাচ্ছেন না তারা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের। 

জানা গেছে, গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে ১০টি পদের মধ্যে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, ভেটেরিনারি সার্জনসহ গুরুত্বপূর্ণ আটটি পদই শূন্য রয়েছে। হাসপাতালটির একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী মো. আব্দুল কাদের ও বহিরাগত ওষুধের দোকানের কর্মচারীদের দিয়েই চলছে গবাদি পশুর চিকিৎসা কার্যক্রম। ফলে চিকিৎসক সংকটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে গবাদি পশুর চিকিৎসা সেবা।

সম্প্রতি হাসপাতালটিতে গিয়ে দেখা গেছে, একজন উপ-সহকারী ভেটেরিনারি চিকিৎসক অফিস রুমে বসে সাদা কাগজে ওষুধ লিখে দিচ্ছেন। আর বাইরের ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে আনার পর অবসরপ্রাপ্ত ড্রেসার মো. আব্দুল কাদের গবাদিপশুর চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। গবাদি পশুর সংখ্যা বেশি হলে ওষুধের দোকানের এক কর্মচারীও চিকিৎসা সেবায় সহায়তা করছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওই যুবক পাশের একটি দোকানে কাজ করেন। সেই সঙ্গে হাসপাতালে মাঝে-মধ্যে এসে অসুস্থ পশুকে ইঞ্জেকশন পুশ করাসহ বিভিন্ন কাজ করে থাকেন। এ বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনও কথা বলতে চাননি।

হাসপাতালটিতে পশুর চিকিৎসা নিতে আসা রাজ্জাক মোল্লাসহ কয়েকজন ভুক্তভোগী অভিযোগ করলেন, সরকারিভাবে গবাদিপশুর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা তারা পান না। বাধ্য হয়ে বাইরের চিকিৎসক দিয়ে গবাদিপশুর চিকিৎসা করাতে হয়। এতে তাদের হয়রানি ও অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হয়।

চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী মো. আ. কাদের

গ্রামের কয়েকজন খামারি বলেন, তাদের গরু কোনও রোগে আক্রান্ত হলে হাসপাতালে ফোন করলেও কোনও চিকিৎসক আসেন না। হাসপাতালে গেলেও চিকিৎসকের দেখা মিলে না। অতিরিক্ত টাকা দিয়ে বেসরকারি চিকিৎসক দিয়ে তাদের গবাদি পশুর চিকিৎসা করাতে হয়।

অবসরপ্রাপ্ত ড্রেসার আব্দুল কাদের বলেন, জনবল কম থাকায় তিনি অবসর নিলেও এখনও সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

ওষুধের দোকানের কর্মচারী চিকিৎসা দিচ্ছেন- বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজবাড়ী জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে জেলা ট্রেনিং অফিসার ও গোয়ালন্দে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনকারী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নুরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘আমরা এমন কোনও লোক রাখিনি।’

চিকিৎসা সেবা বিষয়ে গ্রাহকদের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শিগগিরই শূন্য পদগুলোতে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা যোগ দেবেন। তখন চিকিৎসা সেবায় আর কোনও সমস্যা থাকবে না।’

Source link

Related posts

বাম্পার ফলনেও লোকসানের শঙ্কায় মানিকগঞ্জের মরিচ চাষিরা

News Desk

সারা দেশে চালের আড়তে অভিযান, জরিমানা-সিলগালা

News Desk

সাতক্ষীরায় আম গাছ থেকে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

News Desk

Leave a Comment