আজ বুধবার দেশের কিংবদন্তি নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দ্র মজুমদারের ৮৩তম জন্মদিন। সংস্কৃতি জগতের উজ্জ্বল এই নক্ষত্র ১৯৪১ সালের ৯ আগস্ট লক্ষ্মীপুরে জন্মগ্রহণ করেন।
রামেন্দু মজুমদার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর পাস করে পেশা হিসেবে শিক্ষকতাকে বেছে নেন। তবে নোয়াখালীর চৌমুহনী কলেজে মাত্র তিন বছর শিক্ষকতা করে ইস্তফা দেন। পেশা পরিবর্তন করে ১৯৬৭ সালে পাকিস্তানের করাচিতে বিজ্ঞাপনশিল্পে যোগ দেন তিনি।
স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতা-বিবৃতির একটি ইংরেজি সংকলন সম্পাদনা করে দিল্লি থেকে প্রকাশ করেন তিনি। ১৯৭২ সালে দেশে ফিরে বিটপী অ্যাডভারটাইজিংয়ে পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন অ্যাডভারটাইজিং ফার্ম ‘এক্সপ্রেশানস’, যেখানে তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কর্মরত।
১৯৬২ ও ১৯৬৫ যথাক্রমে বেতার ও টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করছেন। তিনি মঞ্চে অভিনয় করছেন ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে। বাংলাদেশের নবনাট্য চর্চা ও আন্দোলনে রামেন্দু মজুমদার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছেন।
তিনি ‘থিয়েটার’ নাট্যদলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, ‘থিয়েটার’ পত্রিকার সম্পাদক, ‘আবদুল্লাহ আল-মামুন থিয়েটার স্কুল’-এর অধ্যক্ষ, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি হিসেবে তিনি বাংলাদেশের নাটক ও সংস্কৃতি চর্চা বেগবান করেছেন।
বাংলাদেশের নাটককে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত করাতে যাঁরা ভূমিকা রেখেছিলেন তাঁদের মধ্যে রামেন্দু মজুমদার একজন। ১৯৮২ সালে ‘ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউট’ (আইটিআই)-এর বাংলাদেশ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। প্রথমে সাধারণ সম্পাদক ও পরে সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ আইটিআই কেন্দ্রকে একটা মর্যাদার আসনে পৌঁছাতে নিরলস পরিশ্রম করেছেন তিনি।
রামেন্দু মজুমদারের মৌলিক ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৭। তিনি বিভিন্ন সম্মাননা ও পদক পাওয়া ছাড়াও ২০০৯ সালে রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘একুশে পদক’ পেয়েছেন। বাংলা একাডেমি তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করেছে। রামেন্দু মজুমদার দ্বিতীয় এশিয়ান হিসেবে বিশ্বনাট্য সভা ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের (আইটিআই) সভাপতি নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশের জন্য বয়ে এনেছেন অনন্য গৌরব।
দেশের কিংবদন্তি অভিনেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার রামেন্দু মজুমদারের স্ত্রী। অভিনয়শিল্পী ত্রপা মজুমদার তাঁদের একমাত্র মেয়ে।