নারায়ণগঞ্জে অভিযান চালিয়ে বিএনপির ৪৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) রাত থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এদিকে জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে দিনব্যাপী তল্লাশি চালানো হয়েছে।
বিএনপি নেতাকর্মী সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে প্রায় বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূলত আগামী শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই দফায় নারায়ণগঞ্জে গত কয়েকদিনে মোট শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয় বলে দাবি করেন তারা।
গ্রেফতার নেতাকর্মী হলেন- সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির কর্মী এনায়েত বিন আমান, শহিদুল ইসলাম, আবু জোবায়ের ওরফে আরিয়ান, সালাউদ্দিন, কাজী গোলাম কাদির ও চট্টগ্রাম সন্দ্বীপ থানার মুছাপুর ইউনিয়নের বিএনপির সেক্রেটারি মো. ইদ্রিস আলম, ১৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. সেলিম, সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি ইউনুস রয়েছেন। বাকি নেতাকর্মীদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
গ্রেফতারের বিষয় জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, এখন পর্যন্ত মহানগর বিএনপির আওতাধীন ২২ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। এভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, গত কয়েকদিনে আমাদের শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গায়েবি মামলায় এদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানা ১৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি দিদার খন্দকার বলেছেন, সমাবেশকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। আমার বাড়িতেও দুইবার পুলিশ এসে খুঁজে গেছে, গতকাল রাতেও এসেছিল।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) চাইলাউ মারমা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাত থেকে আজ রাত পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিএনপির ৪৫ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে কারও বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট রয়েছে, কারও পুরোনো মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশির বিষয়ে তিনি বলেন, জনগণের জানমাল রক্ষার্থে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। মহাসড়কে পাঁচ চেকপোস্টে তল্লাশি চলছে। চেকপোস্টে কাউকে হয়রানি করা হয়নি। এখন পর্যন্ত কোনও আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি।
এদিকে শুক্রবার দিনব্যাপী ঢাকা-চট্টগ্রাম ও সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড, কাঁচপুর, তারাব বিশ্বরোড ও এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের কাঞ্চন মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। এ সময় বাস, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে তল্লাশি করাসহ যাত্রীদের সন্দেহ হলে নানান প্রশ্ন করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি।
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকারী উৎসব পরিবহনের যাত্রী আক্কাস আলী জানান, ঢাকাগামী বাসটি সাইনবোর্ড এলাকায় পৌঁছাতেই পুলিশে বাস থামিয়ে চেক করেছে। যাত্রীদের নানা প্রশ্ন করেছে। এমনকি যাত্রীদের ব্যাগ চেক করেছে।