গাজীপুরের বাসন থানার চান্দনা এলাকার মনজুরুল ইসলাম তার প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া জুয়েল মিয়াকে ৬০ হাজার টাকা ধার দিয়েছিলেন। দীর্ঘ দিনেও টাকা ফেরত না দেওয়ায় দুজনের বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে জুয়েলকে চড়-থাপ্পড় দেন মনজুরুল। এর প্রতিশোধ নিতে মনজুরুলের সাত বছরের শিশুকন্যাকে হত্যা করেছে জুয়েল।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে এসব তথ্য জানিয়েছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আবু তোরাব মো. শামসুর রহমান। এর আগে রবিবার রাতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সোমবার রাতে চান্দনা থেকে দুই কিলোমিটার দূরে তেলিপাড়া এলাকার ঝোপঝাড়ের ভেতর থেকে মারিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত মারিয়া আক্তার শেরপুর সদর উপজেলার নলবাইদ গ্রামের মনজুরুল ইসলামের মেয়ে। মারিয়া তার বাবা-মায়ের সঙ্গে বাসন থানার চান্দনা এলাকার আব্দুল হালিমের বাসায় ভাড়া থাকতো এবং চান্দনা প্রতিভা মডেল একাডেমির নার্সারির শিক্ষার্থী ছিল। একই বাসার অন্য কক্ষে ভাড়া থাকতো জুয়েল মিয়া (৩৯)। এ ঘটনায় জুয়েলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জুয়েল পরিবহনশ্রমিক ও বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে।
জুয়েলকে গ্রেফতারের পর নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে উপ-কমিশনার আবু তোরাব বলেন, ‘গত রবিবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে বাসার সামনে হাঁটতে বের হয় মারিয়া। সন্ধ্যা পর্যন্ত বাসায় না ফেরায় প্রতিবেশী ভাড়াটিয়াদের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেন মা-বাবা। পরদিন সোমবার রাত ৯টার দিকে তেলিপাড়া এলাকায় ঝোপঝাড়ের ভেতরে এক শিশুর লাশ দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। তখন প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে মেয়ের লাশ শনাক্ত করেন মারিয়ার বাবা-মা। এ ঘটনায় বাসন থানায় হত্যা মামলা করেন তার বাবা। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সোমবার রাতেই জুয়েলকে নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।’
উপ-কমিশনার আরও বলেন, ‘শিশুটির বাবার কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিল জুয়েল। দীর্ঘ দিনেও টাকা ফেরত না দেওয়ায় কয়েকদিন আগে বাগবিতণ্ডার সময়ে জুয়েলের সঙ্গে হাতাহাতি হয় শিশুটির বাবার। এর প্রতিশোধ নিতে রবিবার বিকালে কৌশলে মারিয়াকে তেলিপাড়ায় নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে জুয়েল। পরে লাশ ঝোপঝাড়ের ভেতরে গাছের পাতা দিয়ে ঢেকে রাখে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করে জুয়েল জানিয়েছে, পাওনা টাকা না দেওয়ায় কয়েকদিন আগে মারিয়ার বাবা তাকে মারধর করেছে। মারধরের প্রতিশোধ নিতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত উপ-কমিশনার খায়রুল আলম ও সহকারী কমিশনার ফাহিম আজাদ প্রমুখ।