রুশ ফেডারেশনের আকাশসীমাতে থেকেই পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে পারমাণবিক হামলা চালাতে সক্ষম- রাশিয়ার এমন একটি যুদ্ধবিমান বা মহাকাশযান নিয়ে আলোচনা রয়েছে বেশ কিছুদিন ধরে।
এ স্টিলথ বোম্বারটিকে অ্যাডভান্সড লং-রেঞ্জ এভিয়েশন কমপ্লেক্স বা ‘পিএকে ডিএ’ বলা হচ্ছে। এপ্রিলের শুরুর দিকে এর বাহ্যিক কাঠামোর চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এটি তৈরিতে যে দুটি বিষয়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে তা হলো- রাডারে এর উপস্থিতি যেন ধরা না পড়ে আর এর দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহারের সক্ষমতা। বর্তমানে এর প্রথম পূর্ণাঙ্গ প্রোটোটাইপ তৈরির কাজ চলছে।
নতুন এ বোম্বারটির কোনো টেইল ইউনিট থাকছে না ও এর মূল অংশটি থাকবে ডানা থেকে বিচ্ছিন্ন। ঘণ্টায় এটি ১ হাজার ১৯০ কিলোমিটার গতিতে উড়ত পারবে। তবে এ গতি রাশিয়ার হাতে থাকা আরেকটি স্ট্র্যাটেজিক বোম্বার টিইউ-১৬০ এর চেয়ে কম। রুশ বিমান বাহিনীর এই টিইউ-১৬০ বোম্বারগুলোরই জায়গা নেবে এই ‘পিএকে ডিএ’।
রাডার থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে এটি কেবলমাত্র ইন্ট্রা-ফিউসলেজ অস্ত্র ব্যবহার করবে। যে ধরনের অস্ত্র এটি ব্যবহার করবে তার মধ্যে থাকছে দূরপাল্লার ক্রুজ মিসাইল ও হাইপারসনিক মিসাইল।
ভাদিম কোজুলিন নামে অ্যাকাডেমি অব মিলিটারি সায়েন্সের একজন অধ্যাপক রাশিয়া বেয়ন্ডকে বলেছেন, এর সমস্ত সরঞ্জাম যতটা সম্ভব স্বয়ংক্রিয় রাখা হয়েছে। প্রকৌশলীরা এখন এটিকে চালকবিহীন মুডে চালিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। এখন পর্যন্ত ধারণা করা হচ্ছে, বোম্বারটি আকাশে থেকেই আরও কিছু চালকবিহীন যান নিয়ন্ত্রণ করবে আর সম্পূর্ণভাবে এয়ার টু এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ব্যবহার করতে পারবে।
তিনি আরও বলছেন, এই স্ট্র্যাটেজিক বোম্বারেটি রাশিয়ার সীমানা না পেরিয়েই অর্থাৎ নিজেদের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের ভেতরে থেকেই পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে হামলা চালাতে সক্ষম।
অন্যান্য আধুনিক স্ট্র্যাটেজিক বোম্বারের মতো এটিও ৪০ টন গোলাবারুদ বহনে সক্ষম। এর আয়ুষ্কাল ধরা হয়েছে কমপক্ষে ১২ বছর। তবে পর্যাপ্ত রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে বিমানগুলো ২১ বছর পর্যন্ত কাজ করতে পারে। ২০২৭ সালের মধ্যে বিমানটি রুশবহরে যোগ দেবে বলে আশা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তুপোলেভের।