চট্টগ্রামের রাস্তায় নামছে এসি বাস, শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ছাড়
বাংলাদেশ

চট্টগ্রামের রাস্তায় নামছে এসি বাস, শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ছাড়

চট্টগ্রামের সড়কে আট বছর পর আবারও চালু হচ্ছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) বাস সার্ভিস। আগামী জুন মাসে সড়কে নামার কথা রয়েছে। প্রধম ধাপে চলবে ২০টি। ‘চট্টলা চাকা’ নামে বাসগুলো পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় পরিবহন সংস্থা শান্তি এক্সপ্রেস লিমিটেড। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সংস্থাটি। 

৩৮ আসনের বাসগুলো কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত পর্যন্ত প্রতিদিন যাতায়াত করবে। ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা পর্যন্ত। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য থাকছে বিশেষ ছাড়। এসব বাস সড়কে নামলে যাত্রীরা উন্নত সেবা পাবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

২০১৬ সালে প্রিমিয়ার ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস লিমিটেড নামের একটি কোম্পানি নগরীর ১৪ নম্বর রুটে ছয়টি পরিবহন নিয়ে এসি বাস সার্ভিস চালু করেছিল। সেটি স্থায়ী হয়নি। কয়েক মাসের মধ্যে সড়ক থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল। ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন নগরীর তিনটি রুটে এসি বাস চালুর উদ্যোগ নেন। সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে এসব বাস চালুর জন্য করপোরেশনের ৫২তম সাধারণ সভায় সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছিল। প্রথম দিকে তিনটি রুটে ১০০টি বাস নামানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এর মধ্যে কালুরঘাট থেকে পতেঙ্গা, ভাটিয়ারী থেকে লালদিঘী এবং নিউমার্কেট থেকে ফতেয়াবাদ রুটে নামানোর কথা ছিল। পরে এই উদ্যোগ সফল হয়নি। আট বছর পর আবারও নতুন করে এসি বাস নামানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে অনুমোদনও পেয়েছে শান্তি এক্সপ্রেস লিমিটেড।

শান্তি এক্সপ্রেস লিমিটেড সূত্র জানায়, নগরীর চান্দগাঁও কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত পর্যন্ত ১৪ নম্বর রুটে এসব এসি বাস চলাচল করবে। পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত পর্যন্ত প্রতিদিন বহু লোক যাতায়াত করেন। এর মধ্যে গণপরিবহন হিসেবে যাত্রী পরিবহনে নিয়োজিত আছে ২৫০টি নন কাউন্টারভিত্তিক ও ৫০টি কাউন্টারভিত্তিক বাস সার্ভিস। ওই রুটে উন্নত যাত্রীসেবার প্রতিশ্রুতি নিয়ে নামছে এসি বাস।’

শান্তি এক্সপ্রেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আগামী জুন থেকে বাস চলাচল শুরু হবে। ২০টির অনুমোদন পেয়েছি। রোজার ঈদের পর নামানোর কথা থাকলেও ডলার সংকটের কারণে বাসগুলোর চেসিস ভারত থেকে আমদানি করা সম্ভব হয়নি। এখন জুন মাসের শেষ দিকে নামাতে পারবো বলে আশা করছি। ইতোমধ্যে ১০টি প্রস্তুত হয়েছে। চেসিস ভারতীয় কোম্পানি টাটা মোটরসের হলেও বডিগুলো ঢাকায় প্রস্তুত করা হচ্ছে। যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারবেন। প্রতিটি বাসে আসন থাকবে ৩৮টি। শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ছাড় থাকবে, অর্থাৎ নির্ধারিত ভাড়ার অর্ধেক দেবেন তারা।’

জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক সৈয়দ আইনুল হুদা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চট্টগ্রামের সড়কে বর্তমানে কোনও এসি বাস নেই। এসি বাস চালু হলে গরমের মধ্যে যাত্রীরা স্বস্তিতে গন্তব্যে যেতে পারবেন। এটি ভালো উদ্যোগ। শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ছাড়সহ ভাড়া ২০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যাত্রীসেবার মানোন্নয়নের জন্য কাউন্টারভিত্তিক পরিষেবা চালু করতে উৎসাহিত করে আসছি আমরা।’  

কাউন্টারভিত্তিক বাস সার্ভিস চালু হলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে এবং যানজট কমবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক উত্তর বিভাগের উপকমিশনার জয়নুল আবেদীন। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘যাত্রীরা ভালো সেবা পাবেন বলে আশা করছি। এ লক্ষ্যে প্রস্তুতিও নিয়েছে পরিবহন সংস্থাটি।’ 

বিআরটিএর তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম নগরীতে বাসের জন্য ১৭টি, হিউম্যান হলারের জন্য ১৮টি ও অটো টেম্পোর জন্য ২০টি রুট রয়েছে। এর মধ্যে নির্ধারিত রুটগুলো দিয়ে দৈনিক এক হাজার দুই শতাধিক বাস চলাচল করে। দুই হাজারের বেশি হিউম্যান হলার এবং অটো টেম্পো চলাচল করে। তবে চট্টগ্রামে ঠিক কত সংখ্যক গণপরিবহন রয়েছে এবং কত যাত্রী এগুলো ব্যবহার করেন, তার তথ্য নেই বিআরটিএর কাছে।

Source link

Related posts

নিজ ঘরেই অবহেলিত রূপসী বাংলার কবি 

News Desk

চট্টগ্রামে ইংরেজিতে নামফলক লেখায় ৮ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

News Desk

দেশে করোনায় আরো ৫০ জনের মৃত্যু

News Desk

Leave a Comment