চট্টগ্রাম নগরীতে প্রথম আন্ডারপাস নির্মাণ করা হচ্ছে জনবহুল বহদ্দারহাট মোড়ে। প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে এই আন্ডারপাস নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। ইতিমধ্যে এর সম্ভাব্যতা যাচাই এবং নকশাও চূড়ান্ত করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এটি হবে চট্টগ্রামের প্রথম এই আন্ডারপাসে সংযুক্ত থাকবে এস্কেলেটর (চলন্ত সিঁড়ি) সুবিধাও। এটি নির্মাণের জন্য দরপত্রও আহ্বান করা হয়েছে।
চসিক সূত্র জানিয়েছে, বহদ্দারহাট মোড়ে প্রথমে ফুটওভারব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা নেয় সিটি করপোরেশন। তবে ওই স্থানে এখন ফ্লাইওভার আছে, আর সেটির উচ্চতাও কিছুটা কম থাকায় ফুটওভারব্রিজ নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে আন্ডারপাস নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গত ২৮ এপ্রিল আন্ডারপাস নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। ২৭ মে ছিল দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন।
নকশা অনুযায়ী, আন্ডারপাসটির দুটি প্রবেশপথ থাকবে। এরমধ্যে বহদ্দারহাট পুলিশ বক্সের সামনে একটি এবং আরাকান রোডের উত্তর পাশে অন্যটি। ৪১ দশমিক ২ মিটার দীর্ঘ এবং ১০ মিটার প্রশস্ত আন্ডারপাসটির উচ্চতা হবে ৪ মিটার। দুই প্রবেশ মুখে একটি করে দুটি সিঁড়ি এবং একটি করে দুটি স্কেলেটর (চলন্ত সিঁড়ি) থাকবে।
আন্ডারপাসের দুই পাশে ১০টি করে ২০টি দোকান নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি দোকানের জন্য আন্ডারপাসের ২ দশমিক ৭৫ মিটার জায়গা ব্যবহার হবে। আর মাঝখানে সাড়ে ৪ মিটার (প্রায় ১৫ ফুট) জায়গা থাকবে মানুষের হাঁটার জন্য।
আন্ডারপাসটির নকশা প্রণয়ন করেছে ‘ডিজাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্ট লিমিটেড’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের কোয়ালিটি অ্যান্ড কোয়ানটিটি ইঞ্জিনিয়ার মোজাফ্ফর আলী মামুন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগরীর ব্যস্ততম জংশনের মধ্যে বহদ্দারহাট অন্যতম। এখানে প্রতি ঘণ্টায় ১ হাজারের বেশি মানুষ সড়ক পারাপার করে। চারদিকে সংযোগ সড়ক থাকার কারণে এই মোড়ে গাড়ির চাপও বেশি থাকে। যে কারণে সড়ক পারাপারে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। আন্ডারপাস নির্মাণ হলে দুর্ঘটনা এড়িয়ে নির্বিঘ্নে সড়ক পারাপার করতে পারবেন পথচারীরা। আন্ডারপাস দিয়ে শুধু মানুষ পারাপার করবে। কোন গাড়ি পারাপার হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আন্ডারপাস দিয়ে যাতে পানি প্রবেশ করতে না পারে সেভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে দুই প্রবেশমুখে ক্যানোপি থাকবে। যার ফলে পানি প্রবেশ করতে পারবে না। এরপরও যদি পানি প্রবেশ করে তা নিষ্কাশনের জন্য থাকবে দুইটি পাম্প।’
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘বহদ্দারহাট মোড় হচ্ছে নগরীর অত্যন্ত ব্যস্ততম একটি মোড়। এই মোড়ে একাধিক সংযোগ সড়ক থাকার কারণে এখানে প্রচুর গাড়ি চলাচল করে। যে কারণে পথচারীদের ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পার হতে হয়। আন্ডারপাস নির্মিত হলে এ ঝুঁকি থাকবে না। মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে আন্ডারপাসের ভেতর দিয়ে সড়ক পার হতে পারবেন। এটি হবে নগরীর প্রথম আন্ডারপাস, যাতে এস্কেলেটরও যুক্ত থাকবে।’