বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, ‘আমাদের বাবা মা আমাদের শিখিয়েছেন, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে। নয়ত সমাজের তথাকথিত মর্যাদাবান কিছু হতে হবে। কিন্তু, তারা আমাদের কোনোদিন এ স্বপ্নটি দেখায়নি, আমাদের ভালো রাজনীতিবিদ হতে হবে।’
রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫টার দিকে মুন্সীগঞ্জের সরকারি হরগঙ্গা কলেজ প্রাঙ্গণে ছাত্র-জনতার সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক বলেন, ‘যদি ছাত্র-জনতা একসঙ্গে মাঠে নামে, তাহলে শুধু শেখ হাসিনাই নয়, পৃথিবীর যেকোনও ফ্যাসিস্টের পতন ঘটানো সম্ভব। মুন্সীগঞ্জসহ সারা দেশে ছাত্র-জনতা ঐক্য গড়ে তোলে এবং ৫ আগস্ট তাদের প্রচেষ্টায় শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। এগুলো আমাদের ব্যাকগ্রাউন্ড। কিন্তু সামনে আমাদের জন্য কী আছে সেটি নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।’
সারজিস আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করেছে, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটাতে। কিন্তু তারা পারেনি। যেদিন ছাত্র-জনতার সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে দাঁড়িয়েছে এবং ছাত্ররা সামনের সারিতে ছিল সেদিন ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়েছে। বর্তমানে ছাত্রদের উপর বাংলাদেশের মানুষের যে আস্থা রয়েছে দেশের তথাকথিত রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর সে আস্থাটি নেই।’
তিনি ছাত্রদের নির্দেশনা দিয়ে বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার যেভাবে রাস্তায় নির্বিচারে পশুপাখির মত মানুষ হত্যা করেছে, যেভাবে লাশ ময়লার স্তূপের মতো ট্রাকে করে নিয়ে গিয়েছে সেগুলোর ডকুমেন্টেশন করে রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের সঙ্গে মানুষের যে সাংঘর্ষিক যে ধারাগুলো রয়েছে- সেগুলো পরিবর্তন করা উচিত। নতুনভাবে সাজানো উচিত। অন্তবর্তীকালীন সরকারকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই, তারা যেন এ কাজটি তাদের জায়গা থেকে করেন।’
গত ৪ আগস্ট মুন্সীগঞ্জের সুপার মার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্রদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন মুন্সীগঞ্জ শহরের উত্তর ইসলামপুর এলাকার রিয়াজুল ফরাজি, মোহাম্মদ সজল ও নূর মোহাম্মদ ডিপজল। এ ছাড়া সেদিন অর্ধশতাধিক গুলিবিদ্ধসহ আহত হন শতাধিক ছাত্র-জনতা। এ ছাড়া আন্দোলনে বিভিন্ন সময়ে মুন্সীগঞ্জের আরও ছয় জন ঢাকায় নিহত হন।