আওয়ামী লীগ থেকে অব্যাহতির একদিন পর ক্ষমা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবমাননা করে বক্তব্য দেওয়া নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ বারদী ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বাবুল। শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া চৌরাস্তার একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে তিনি প্রধানমন্ত্রী, দেশ ও জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয় জেলা আওয়ামী লীগ। নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক এম এ রাসেল স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে অব্যাহতির বিষয়টি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাহবুবুর রহমান বাবুল বলেন, ‘গত ১২ ফেব্রুয়ারি একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে নিজ এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা ও মাদক নিয়ন্ত্রণ করার বক্তব্য দিতে গিয়ে মুখ ফসকে বেফাঁস মন্তব্য করে ফেলেছি। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। দেশ ও জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি আমি।’
তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমি বর্তমানে বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি, তাই ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের ছায়াতলে থেকে সেই দায়িত্ব পালন করতে চাই। অব্যাহতি তুলে নিতে আমার ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।’
জেলা আওয়ামী লীগের ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বারদী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বাবুল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা ক্ষমার অযোগ্য। দলীয় মনোনয়ন পেয়ে চেয়ারম্যান হয়ে বাবুল দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছেন।
এর আগে, ১২ ফেব্রুয়ারি সোনারগাঁও উপজেলার বারদী ইউনিয়নের পাইকপাড়া দেওয়ান বাড়ির বাৎসরিক ওয়াজ মাহফিলে চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহবুবুর রহমান বাবুল প্রধানমন্ত্রীকে অবমাননা করে বক্তব্য দেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমাকে কেউ টাকা দিয়ে কিনতে পারবে না। আমার এলাকায় আমি ম্যাজিস্ট্রেট। আমি যা বলবো তাই হবে। আমি যদি সুইচ অফ বলি তাহলে সেটাই হবে। প্রশাসন আমার পক্ষে কাজ করবে। কারও ফোনে প্রশাসন আসবে না। ১৯৭৪ সালের পর বারদীতে কেউ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হয়নি। এটা আপনাদের গর্ব, আপনাদেরকেই ধরে রাখতে হবে। আগের দিন ভুলে যেতে হবে। আমি শুধু চেয়ারম্যান না, আমি আপনাদের বাবুল। শান্তির বাজারে শান্তি থাকবে। বাইরে থেকে কেউ এসে ঝামেলা করলে হাত পা ভেঙে ফোন দেবেন। আমি উদ্ধার করবো। হাত পা না ভেঙে আমাকে ফোন দেবেন না। হাতে চুড়ি পরে বসে থাকবেন না। আমি আমার যোগ্যতায় চেয়ারম্যান হয়ে এসেছি। তাই কাউকে পরোয়া করি না।’
উল্লেখ্য, ইউপি নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী ছিলেন। প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় তিনি বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হন।