ইসরায়েল আর বিএনপির মধ্যে পার্থক্য কী, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর
বাংলাদেশ

ইসরায়েল আর বিএনপির মধ্যে পার্থক্য কী, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বানচাল করতে হরতাল-অবরোধের নামে জ্বালাও-পোড়াও চালিয়ে দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  

ইসরায়েল আর বিএনপির মধ্যে পার্থক্য কী—প্রশ্ন রেখে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ফিলিস্তিনে শিশুসহ নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করছে ইসরায়েলি বাহিনী। বিএনপি-জামায়াত একই কায়দায় এ দেশে গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগ করে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করছে। তাহলে ইসরায়েল আর বিএনপির মধ্যে পার্থক্য কী? ২০১৩ সালে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা শুরু করেছিল তারা। সেসময় দেশের জনগণ প্রতিহত করেছিল। এখন আবারও জ্বালাও-পোড়াও করে মানুষ হত্যা করছে। জনগণকে আবারও এদের প্রতিহত করতে হবে। যে হাতে আগুন দেওয়া হবে, সেই হাত পুড়িয়ে দিতে হবে। যে আগুন দেবে, তাকে ধরিয়ে দিতে হবে। আগুন দেওয়া লোককে ধরিয়ে দিতে পারলে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।’

সোমবার (১৩ নভেম্বর) বিকাল সোয়া ৪টায় খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সার্কিট হাউজ মাঠের জনসভা মঞ্চে ওঠেন তিনি। এরপর ২২টি প্রকল্প উদ্বোধন এবং দুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘গণতন্ত্র আছে বলেই দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে খুলনার শিল্প-কলকারখানা, মোংলা বন্দর বন্ধ করে দিয়েছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে আবারও মোংলা বন্দর চালু করেছে। পদ্মা সেতু করেছে, মোংলা পর্যন্ত রেললাইন গেছে। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই জনগণের উন্নয়ন হয়। দুর্ভাগ্যের বিষয়, আমরা করি উন্নয়ন আর বিএনপি-জামায়াত সব ধ্বংস করে দেয়।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমার লক্ষ্য একটাই, দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন। আমার তো চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমি শুধু এ দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে চাই। ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আপনারা আমাকে ক্ষমতায় এনেছেন। ভোট দিয়ে সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। আমি দেশের উন্নয়ন করেছি। সম্মান এনে দিয়েছি। আজকের বাংলাদেশ আত্মবিশ্বাসী হিসেবে এগিয়ে চলেছে। গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রয়েছে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে আবারও নৌকায় ভোট দিন। নৌকাতে ভোট দিয়েছেন বলেই এসেছে স্বাধীনতা, নৌকাই গড়বে স্মার্ট বাংলাদেশ। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আমরাই গড়ে দিয়ে যাবো।’

বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত মানেই সন্ত্রাস, অত্যাচার ও নির্যাতন। গত ২৮ অক্টোবর পুলিশকে লাঠিপেটা করে হত্যা করেছে তারা, সাংবাদিকদের পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। বেহুঁশ হয়ে গেছে, তাও ছাড়েনি।  ৪৫ জন পুলিশ আহত হয়েছেন। বিচারপতির বাসভবনে হামলা চালিয়েছে, এদের মধ্যে কোনও মনুষ্যত্ব নেই। বিএনপি-জামায়াত মানুষের মঙ্গল করতে পারে না। মানুষ খুন বিএনপি-জামায়াতের একমাত্র গুণ।’

যারা আগুন দিয়ে মানুষ মারে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি কী ইসরায়েলের কাছে শিক্ষা নিয়েছে নাকি? তারা তো একইভাবে হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। বিএনপি আসলে দেশের ধ্বংস চায়। তারা নির্বাচন হতে দিতে চায় না। অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, কেউ যদি গাড়িতে আগুন কিংবা মানুষকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে, ওই হাত ওই আগুনে পুড়িয়ে দেবেন, উপযুক্ত শিক্ষা দিয়ে দেবেন, যেন আর কেউ সাহস না পায়।’

দলের নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এলাকায় এলাকায় আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলো মানুষের নিরাপত্তা দেবে। আপনারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কাজ করবেন। যাতে তারা দেশের কোনও মানুষের ক্ষতি করতে না পারে। যারা আগুন দিয়ে মানুষ মারে, তাদের কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। যারা আগুন দেয় তাদের ধরিয়ে দিন। আপনারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এই কাজে সহযোগিতা করবেন।’ 

জনসভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। এতে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল ও শেখ সারহান নাসের তন্ময়।

Source link

Related posts

উত্তরাঞ্চলে আকস্মিক বন্যার শঙ্কা

News Desk

চলন্ত বাসে আগুন, হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে আহত ১০

News Desk

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

News Desk

Leave a Comment