জুমের জমিতে আগুন দেওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত লামার সরইয়ের ডলুছড়ি মৌজার জয়চন্দ্র ত্রিপুরা পাড়া, লাংকম ম্রো পাড়া ও রেংয়াং ম্রো পাড়ায় ৩৯ পরিবার উপজেলা প্রশাসনের দেওয়া ত্রাণ সামগ্রী গ্রহণ করেনি। নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.মোস্তফা জাবেদ কায়সার ত্রাণ দিতে গেলে সরইয়ের ডলুছড়ি মৌজায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, সরই ইউনিয়ন থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জয়চন্দ্র ত্রিপুরা পাড়া, লাংকম ম্রো পাড়া ও রেংয়াং ম্রো পাড়ায় শুকনা খাবার ও পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এ খবর পেয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের নির্দেশে রবিবার লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ত্রাণ বিতরণ করতে যান। প্রথমে ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকে ত্রাণ সংগ্রহ করে ঘরে নিয়ে যায়। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের লোকদের দেখে তাদের মনে হয় লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের পক্ষ থেকে এই ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। পরে পাড়াবাসীরা এ সন্দেহ থেকে পুনরায় ত্রাণ সামগ্রী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ফিরিয়ে দেয়।
এ বিষয়ে রেংয়াং ম্রো পাড়ার কারবারি রেংয়াং ম্রো বলেন, পাড়াবাসীদের খাদ্যের অভাব রয়েছে, পানিরও তীব্র সংকট। জেলা প্রশাসন থেকে ত্রাণ দেওয়া হলেও বিতরণকারীদের সঙ্গে জুমের জমি দখলকারী ও আগুনে পুড়িয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করা লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের লোকজন থাকায় আমরা ত্রাণ নেইনি। আমরা কখনেও রাবার মালিকদের টাকায় ত্রাণ নিবো না। তিনি আরও বলেন, প্রথমে বুঝতে না পেরে কয়েকটি ত্রিপুরা পরিবার ত্রাণ নিলেও পরে তা ফেরত দেওয়া হয়।
সরই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইদ্রিছ চৌধুরী বলেন, প্রশাসন ত্রাণ দিতে গেলে প্রথমে অনেকে তা গ্রহণ করে। পরে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের পক্ষ থেকে এই ত্রাণ দেওয়া হয়েছে মনে করে তারা আবার তা ফিরিয়ে দেয়। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও ত্রাণ তাদের হাতে তুলে দিতে না পেরে পরে লামা ফেরত যান প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোস্তফা জাবেদ কায়সার বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সকালে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে ত্রাণ দিতে যাই। প্রথমে তারা ত্রাণ গ্রহণ করলেও, পরে তাদের সন্দেহ হয় যে রাবার কোম্পানির লোকজন তাদের এ ত্রাণ দিয়েছে। পরে তারা ত্রাণ ফিরিয়ে দেন। আমরা তিন পাড়ার সবার জন্য চাল, ডাল, মুড়ি, চিড়া, লবণ এবং পানি নিয়েছিলাম। কিন্তু তারা ফেরত দেওয়ায় আমরা ত্রাণ নিয়ে ফিরে আসি।