কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধির কারণে ডুবে গেছে রাঙামাটি পর্যটন শিল্পের আইকন ঝুলন্ত সেতু। ফলে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন এখানে ঘুরতে আসা পর্যটকরা। বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে তলিয়ে গেছে সেতুটি। পাটাতনের ওপর পানি উঠেছ প্রায় ৫ থেকে ৬ ইঞ্চি, যা বেড়ই চলছে। পানির চাপে খুলে গেছে পাটানতের কয়েকটি কাঠ। তা মেরামতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। আর নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সেতুতে পর্যটক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
কাপ্তাই কর্ণফুলী জল বিদ্যুৎকেন্দ্রের তথ্যমতে, কাপ্তাই বাঁধের সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা ১০৯ এমএসএল। কিন্তু ১০৫ এমএসএল হলেই ডুবে যায় এই সেতু।
এদিকে এই সেতুতে ওঠতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে নোটিশ ও লাল পতাকা টানিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকরা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। আবার অনেকেই এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন ডুবন্ত সেতুতে। ঝুলন্ত সেতুর এমন অবস্থা দেখে হতাশ পর্যটকরা, আর এতে ক্ষতির আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের।
ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক মো. নাঈম উদ্দিন বলেন, অনেক আশা নিয়ে রাঙামাটি বেড়াতে এলাম। এসে দেখি ঝুলন্ত সেতুটি অনেকাংশে ডুবে আছে। হতাশা ছাড়া আর কিছুই বলার নেই। কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে নজর দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
নোয়াখালী থেকে একদল বন্ধু বেড়াতে একই সুরে কথা বলেন। তারা বলে, রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে বন্ধুরা মিলে মোটরসাইকেলে করে রাঙামাটিতে সকালে আসি। এক বুক হতাশা নিয়ে ফিরে যাচ্ছি। আগে জানলে আসতাম না। শীতে যখন এসেছি তখন সেতুতে উঠে খুব মজা করি। সেই মজা নিতেই এসেছিলাম। এসে দেখি সেতু ডুবে আছে।
রাঙামাটি পর্যটন নৌযান ঘাটের ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মো. রমজান আলী জানান, পাহাড়ি ঢল নামার কারণে কাপ্তাই লেকের পানির উচ্চতা বেড়েছে। এতে সেতুটি ডুবতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ছয় ইঞ্চি পানিতে ডুবে গেছে। এ কারণে সেতু দিয়ে পারাপার বন্ধ রয়েছে। তবুও কেউ কেউ ডুবে যাওয়া পাটাতন মাড়িয়ে সেতু পার হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, এর ফলে ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতি হবে। ঝুলন্ত সেতু ডুবে যাওয়া সমস্যার স্থায়ী সমাধান চান এই ব্যবসায়ী নেতা।
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন রাঙামাটি শাখার ব্যবস্থাপক আলক বিকাশ চাকমা বলেন, হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঝুলন্ত সেতুর পাটাতন ডুবে গেছে। যার ফলে নিরাপত্তার বিবেচনা করে সেতুতে পর্যটক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। পানি কমে এলে আবারও চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে।