কোটা সংস্কার নিয়ে গাইবান্ধা জেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীর। বুধবার (১৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে জেলা শহরের রেল গেট এলাকায় অবস্থান নিয়ে রেল লাইন অবরোধ করেন। তারা রেল লাইনে গাছের গুঁড়ি ও রেলের পাত লাইনের ওপর তুলে দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় তাদের সরানোর চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু আন্দোলনকারীরা পুলিশ দেখে উত্তেজিত হয়ে উঠেন। এক পর্যায়ে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সদর থানার ওসি মাসুদ রানাসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়।
এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা রেল লাইনের পাশেই অবস্থিত জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালায়। এ সময় সেখানে থাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, পৌর মেয়র মতলুবর রহমান ও সদর উপজেলার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মৃদুল মোস্তাফিজ ঝন্টুসহ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগসহ অঙ্গসংগঠনের অন্তত ৫০ নেতাকর্মী আহত হয়। পরে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মৃদুল মোস্তাফিজ ঝন্টু বলেন, আমরা দলীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের নিয়ে মিটিং করছিলাম। এ সময় আন্দোলনকারী হঠাৎ দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। ভাঙচুর করেছে কয়েকটি মোটরসাইকেল।
আহত পৌর ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক কামাল আহম্মেদ বাবুর অভিযোগ, আমরা দলীয় কার্যালয়ে ছিলাম। হঠাৎ করে ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা আন্দোলনে যোগ দিয়ে দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করে তাদের ওপর হামলা চালায়।
অপরদিকে, এসব ঘটনার পর দুপুর ১টার দিকে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও আগুনের ঘটনা ঘটে। আগুনে দলীয় কার্যালয়ের আসবাবপত্র পুড়ে যায়। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনের ঘটনার সময় দলীয় কার্যালয়ে কেউ না থাকায় কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মো. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ-সমাবেশ থেকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে পুলিশ সদস্যদের আহত করা হয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার সঙ্গে কারা কীভাবে জড়িত তা তদন্ত করে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।