ত্রাণ নিয়ে বন্যার্তদের পাশে রোহিঙ্গারা
বাংলাদেশ

ত্রাণ নিয়ে বন্যার্তদের পাশে রোহিঙ্গারা

বন্যার্ত মানুষদের সহায়তায় ১০ লাখ টাকার ত্রাণ সংগ্রহ করেছেন বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা। তাদের সংগ্রহ করা ত্রাণগুলো বেসরকারি সংস্থা আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের মাধ্যমে নোয়াখালী ও ফেনীর ক্ষতিগ্রস্ত ৫০০ পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। বিশেষ করে ফেনী ও নোয়াখালী বন্যাকবলিতদের পাশে দাঁড়াতে ত্রাণ বিতরণ করেন রোহিঙ্গারা।

শুক্রবার (৩০ আগস্ট) সকালে নোয়াখালীর কবিরহাট এলাকায় ২০০ মানুষের প্রত্যেককে ২ হাজার টাকার একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় প্যাকেট প্রদান করা হয়। কয়েকদিন আগে ফেনীর বিভিন্ন এলাকার ৩০০ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে ৩০০ প্যাকেট ত্রাণ তুলে দেন তারা।

রোহিঙ্গা জানান, বন্যার্তদের সহায়তায় কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩০টি ক্যাম্প থেকে ‘রোহিঙ্গা সাপোর্ট’ নামে একটি গ্রুপ করা হয়। এতে ক্যাম্পের লোকজনের মাঝে ব্যাপক সাড়া মেলে। পরে ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা মাঝিদের (নেতা) নেতৃত্বে নগদ টাকা ও চাল সংগ্রহ করা হয়। সাধারণ রোহিঙ্গারা কেউ টাকা, কেউ চাল দিয়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।

ত্রাণ সংগ্রহে কাজ করা কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অ্যাক্টিভিস্ট মো. ইউনুছ আরমান বলেন, ‘আমরা যখন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিই, তখন এ দেশের মানুষ আমাদের আশ্রয় দিয়েছেন। এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা দেখা দিয়েছে। মানুষ বিপদে পড়েছে। তাই আমরা সবাই মিলে বন্যার্ত মানুষদের সহায়তায় ত্রাণ সংগ্রহ করি। এতে প্রত্যেক ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গাসহ দেশ-বিদেশ থেকে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। আমরা একটি বেসরকারি সংস্থার ফিল্ড সহায়তায় ইতোমধ্যে নোয়াখালী ও ফেনীতে ১০ লাখ টাকার ত্রাণ বিতরণ করেছি। আমাদের ত্রাণ সংগ্রহের কাজ এখনও চলছে।’

বেসরকারি সংস্থা আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন বিন জমির উদ্দিন বলেন, ‘বেশ কিছু রোহিঙ্গা যুবক ক্যাম্প থেকে ত্রাণ তহবিল এনেছেন। সেগুলো দিয়ে বন্যার্ত মানুষদের জন্য চাল, ডালসহ ২ হাজার টাকার নিত্যপ্রয়োজনীয় ৫০০ প্যাকেট ৫০০ মানুষের মাঝে পৌঁছে দিতে আমরা তাদের সহায়তা করছি। এ ছাড়া আমাদের ত্রাণ বিতরণ প্রতিদিন চলছে।’

আলীখালী ক্যাম্পের বাসিন্দা রোহিঙ্গা হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের আয়ের কোনও উৎস নেই। তবুও বন্যার্ত মানুষের কষ্ট দেখে রোহিঙ্গারা মানবিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ, ২০১৭ সালে বাংলাদেশের জনগণ মিয়ানমারে মৃত্যুমুখ থেকে প্রাণে বাচঁতে আসা অসহায় রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। আমার ক্যাম্প থেকে ৩ লাখের বেশি নগদ অর্থ সহায়তা পেয়েছি। সেগুলো বন্যার্ত মানুষদের সহায়তায় পৌঁছে দিয়েছি। আমাদের এ কাজ চলমান থাকবে।’

Source link

Related posts

খোলা আকাশের নিচে আশ্রয়হারা মানুষ

News Desk

বন্যা ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণে সহযোগী হতে চায় ভারত

News Desk

রাজৈরে ‘কুম্ভমেলা’ শুরু

News Desk

Leave a Comment