Image default
বাংলাদেশ

প্লাস্টিক হ্যাঙ্গারের নামে ব্রান্ডের বিদেশি সিগারেট, জব্দ

শুল্কমুক্ত সুবিধার চালানে আসা বিদেশি ব্রান্ডের সিগারেটের বড় চালান জব্দ করলো চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। প্লাস্টিক হ্যাঙ্গারের নামে আনা এসব সিগারেটে প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা চালিয়েছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। বৃহষ্পতিবার চালান খালাসকালে এ রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা ধরা পড়ে। জানা যায়, রাজধানীর নিকটে সাভারের রাজ ফুলবাড়িয়া এলাকার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ভার্সেটাইল আটিরে লিমিটেড চীন থেকে পোশাক কারখানার এক্সেসরিজ প্লাস্টিক হ্যাঙ্গার নামে এক কনটেইনার পণ্য আমদানি করেন। গত ২৮ মে চীনের সাংহাই বন্দর থেকে এমভি এলিয়ন জাহাজে যোগে সংশ্লিষ্ট কন্টেইনারটি চট্টগ্রাম বন্দরে আসে।

এরপর পণ্য খালাসের লক্ষ্যে আমাদানিকারকের মনোনীত সিএন্ডএফ এজেন্ট চট্টগ্রামের শেখ মুজিব রোডের জয়িতা ট্রেড করপোরেশন ১ জুন কাস্টমসে বিল অব এন্ট্রি (নং: সি-৮৮৫২৯৫) দাখিল করেন। পরবর্তীতে পণ্যচালানের শুল্কায়ন কার্যক্রম শেষে বৃহস্পতিবার (৩ জুন) পণ্যচালানটি চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি ইয়ার্ড হতে খালাসের কথা ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস জানতে পারে চালানটিতে মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য আনা হয়েছে। খবর পেয়ে কাস্টমসের এআইআর (অডিট, ইনভেস্টগেশন এন্ড রিসার্চ) টিম পণ্যচালানটির ডেলিভারি কাভার্ড ভ্যানে তল্লাশি চালায়। তল্লাশিকালে পণ্যের কার্টনের গায়ে অপসারণযোগ্য স্টিকারে দেখা যায় ভিন্ন আরেকটি ইম্পোর্টারের নাম৷

তুরাগ গার্মেন্টস এন্ড হোসিয়ারী মিলস লিমিটেড, মিরপুর গাজিপুর সদর মুদ্রিত অবস্থায় ভেতরে অপর দুইটি ইনার কার্টন দেখতে পায় এআইআর টিম। যার ভেতরে লুকানো অবস্থায় বিদেশী বিভিন্ন ব্রান্ডের সিগারেট পাওয়া যায়। বিষয়টি তাৎক্ষণিক উর্ধতন কর্মকর্তাগণকে জানিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় আমদানিকৃত সিগারেট ভর্তি কাভার্ড ভ্যান (নম্বর ঢাকা মেট্রো-ট-২২-৬৫৩১) বন্দরের অভ্যন্তরে আটক করা হয়। পরবর্তীতে সন্ধ্যা ৬টায় সংশ্লিষ্ট সিএন্ডএফ এজেন্টের জেটি সরকার মো. জাকির হোসেন ও জেটি সরকারের সহকারী মো. নেছার উদ্দিন, বন্দর নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও অন্যান্য সংস্থার সদস্য ও প্রতিনিধিগণের উপস্থিতিতে এআইআর কর্মকর্তা কতৃর্ক পণ্যচালানটির শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করা হয়।

কায়িক পরীক্ষাকালে কাভার্ড ভ্যান থেকে সব পণ্য বের করে আনার পর দেখা যায়, ৩০০টি কার্টনের প্রতিটিতে সিগারেটের দুইটি ইনার কার্টন পাওয়া যায়। এতে বিদেশি ৩টি ব্র্যান্ডের মধ্যে ২০ লক্ষ শলাকা করে ইজি (Esse), মন্ড (Mond) ও অরিস (Oris) অর্থাৎ মোট ৬০ লক্ষ শলাকা সিগারেট পাওয়া যায়। যার মোট নেট ওজন ৩০০০ কেজি এবং আনুমানিক বাজার মূল্য সাড়ে ৪ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম কাস্টমসের এআইআর শাখার সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘পণ্যচালানটিতে শর্ত সাপেক্ষে আমদানিযোগ্য পণ্য সিগারেট আমদানি করে আনুমানিক প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি টাকা সরকারি রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা করা হয়। কিন্তু চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস প্রশাসনের কঠোর নজরদারি এবং কর্মকর্তাদের নিষ্ঠা ও আন্তরিকতায় পূর্বের ন্যায় এই অপচেষ্টাও নস্যাৎ করে দেয়া সম্ভবপর হয়েছে। এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার।’ তিনি জানান, ‘পূর্বেও চট্টগ্রাম কাস্টস কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারী ও দৃঢ় প্রচেষ্টায় অভিনব কায়দায় মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে আমদানিকৃত একাধিক সিগারেটের চালান বন্দরের অভ্যন্তরে আটক করা হয়।

সূত্র : চট্টগ্রাম প্রতিদিন

Related posts

৪০ পরিবার দিনে উৎপাদন করছে ৬০ মণ মুড়ি

News Desk

কাজে আসছে না ৪৫ লাখ টাকার স্লুইসগেট

News Desk

লুট হওয়া ১১ অস্ত্র মিয়ানমার থেকে ফেরত পাওয়ার আশা বিজিবির

News Desk

Leave a Comment