গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার কাউয়াবাধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবন যমুনা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবনটি নদীগর্ভে চলে যায়।
শনিবার (২ জুলাই) থেকে ভবনটি বিকট শব্দে ধসে নদীতে বিলীনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
জানা গেছে, ১৫ দিন আগেও যমুনার ভাঙন এলাকা থেকে ১৫০ মিটার দূরত্বে ভবনটির অবস্থান ছিল। গত ২৬ জুন ভবনটি নিলামের সিদ্ধান্ত নেয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর কিছু অংশ ভাঙার কাজ চলছিল। কিন্তু হঠাৎ ভাঙনের তীব্রতায় পুরো ভবনটি মুহূর্তে নদীগর্ভে চলে গেছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুম মিয়া জানান, পানি কমায় যমুনার অব্যাহত ভাঙনের মুখে পড়ে ভবনটি। ২৬ জুন ভবনটি নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়। এরপর সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও করেন শ্রমিকরা। তার আগেই শুক্রবার সন্ধ্যায় তীব্র স্রোতে নদীগর্ভে চলে যায় পুরো ভবন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ১৯৯১ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৯ সালে ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে দ্বিতল ভবনটি নির্মিত হয়েছে। এই ভবনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চলে আসছিল। কিন্তু এখন ভবনটি নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় পাঠদান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য আমিনুর রহমান বলেন, ‘শুক্রবার বিকালে বিদ্যালয়ের ভবনটি দেখতে গিয়ে ছবি ও ভিডিও করি। সেখান থেকে ফেরার পরপরই ভবনটি নদীগর্ভে বিীনের খবর পাই। বিদ্যালয়ের ৩৩ শতাংশ জমির মধ্যে ৩০ শতাংশ জমিই চলে গেছে নদীর বুকে। বর্তমানে বিদ্যালয়ে পাঠদানের কোনও ভবন নেই। তবে পাশেই নিজের আরেকটি জমিতে বিকল্প ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যবস্থা করা হবে। টিনশেড কিংবা অবকাঠামো নির্মাণে হাতে কোনও অর্থ নেই। সরকারি সহযোগিতা না পেলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।’
বিদ্যালয়ের ভবনটি নিলামে কেনা ঠিকাদার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আড়াই লাখ টাকায় কেনার পর ভবনটি ভেঙে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছিল। কয়েকদিন ধরে শ্রমিকরা ভবনের কিছু ইট ও রড সরিয়ে নিলেও শুক্রবার সন্ধ্যার আগে তীব্র স্রোতে ভবনটি ভেঙে পড়ে নদীতে। নিলাম বিজ্ঞপ্তির অল্প সময় অর্থাৎ ৪-৫ দিনে ভবনটি সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। অন্তত ১৫ দিন আগে কর্তৃপক্ষের নিলাম বিজ্ঞপ্তি দেওয়া দরকার ছিল।’