রাজশাহী নগরীতে অক্সিজেনের পাইপ নিয়ে অটোরিকশা চালানো সেই মাইনুরজ্জামান সেন্টু আর নেই। তিনি বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুর দেড়টায় নগরীর কলাবাগান সবজিপাড়া এলাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। মৃত্যুর খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। তিনি সেন্টুর বাসস্থান ও চিকিৎসার পাশাপাশি দাফন-কাফনের ব্যয়ভারও বহন করেন।
রাজশাহী জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় শুক্রবার (৫ জুলাই) দুপুরে পবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিত সরকার সেন্টুর স্ত্রী ও সন্তানদের হাতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্যসামগ্রী ও নগদ অর্থ প্রদান করেন। এই খাদ্যসামগ্রী ও নগদ অর্থ সাহায্য পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মরহুমের পরিবার।
এ সময় সেন্টুর ছেলে রাকিব বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে আমার বাবা শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ ও শ্বাসতন্ত্রের সমস্যায় ভুগছিলেন। তিন সপ্তাহ আগে বাবাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তির খবর পেয়ে ডিসি স্যার চিকিৎসার জন্য ৫ হাজার টাকা পাঠান। ডিসি স্যারের কল্যাণে আমার বাবা মাথা গোজার ঠাঁই পেয়েছেন। এ ছাড়াও তিনি প্রতিমাসে খোঁজখবর নিয়েছেন এবং খাদ্যসামগ্রী ও নগদ অর্থ দিয়েছেন।’
রাকিব আরও বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে বাবাকে চাচার বাড়িতে নেওয়া হয়। সেখানে দেড়টার দিকে তিনি মারা যান। মাগরিবের নামাজের পর নগরীর হেতেম খাঁ বড় মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে হেতেম খাঁ কবরস্থানে দাফন করা হয়। হাসপাতালের চিকিৎসাসহ দাফন-কাফনের সকল ব্যয় জেলা প্রশাসক দিয়েছেন।’
উল্লেখ্য, গত বছরের মে মাসে রিকশাচালক সেন্টুকে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘অক্সিজেনের পাইপ নাকে নিয়ে রিকশা চালান সেন্টু’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরে বিষয়টি জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের নজরে আসে। এরপর তিনি সেন্টুকে তার কার্যালয়ে ডেকে পাঠান। সেন্টুর নিদারুণ কষ্টের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং পবা উপজেলার বড়গাছিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি ঘর বরাদ্দ দেন। চিকিৎসার সব খরচ বহন করেন। পরবর্তীতে পবা উপজেলার বড়গাছিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে স্ত্রী চম্পা বেগমকে নিয়ে বসবাস করা শুরু করেন তিনি। গত ১৬ দিন আগে হঠাৎ করে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন সেন্টু। তারপরে তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে সেন্টুর মৃত্যু হয়।