সাতক্ষীরা করোনা ডেডিকেটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অক্সিজেন সংকটে সাতজন করোনা রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (৩০ জুন) সন্ধ্যার পর হাসপাতালে অক্সিজেন সংকটে দেখা দেয় বলে রোগীর স্বজনরা জানান। তবে হাসপাতালের তত্বাবধায়ক বলেন, অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে।
যারা মারা গেছেন তারা হলেন- আশাশুনির আব্দুল হামিদ (৭৫), কালিগঞ্জের আকরাম হোসেন (৩৭), শহরতলীর ইটাগাছার খায়রুন নেছা (৪০), কুখরালি এলাকার নাজমা খাতুন (৫০), খাইরুন নেছা (৪০) ও মো রবিউল ইসলাম পারভেজ (৫৪)। অন্যদের নাম জানা যায়নি।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা বিভাগের দায়িত্বে থাকা একজন সিনিয়র চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগো নিউজকে বলেন, বুধবার সকাল থেকে মোট ১৪ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সন্ধ্যায় অক্সিজেনে ঘাটতি দেখা দিলে মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে চারজন রোগীর মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়।
সাতক্ষীরা শহরতলীর কুকরালী গ্রামের মো. আব্দুল হাসিব জানান, করোনায় আক্রান্ত হয়ে তার চাচী নাজমা খাতুন হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি হন। মাগরিবের আজানের পর থেকে আইসিইউতে অক্সিজেন সংকট শুরু হয়। এ সময় তার মৃত্যু হয়। তিনি জানান, এ সময় হাসপাতালের প্রতিটি রোগী প্রচণ্ড কষ্ট পাচ্ছিল। অক্সিজেনের অভাবে এক ঘণ্টা ১৫ মিনিটের মধ্যে তার সামনে তিনজন রোগীর মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী কলারোয়ার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা জানান, তার স্ত্রী করোনা উপসর্গ নিয়ে আইসিইউতে ভর্তি আছেন। তার সামনে অক্সিজেন সংকটে দুইজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের বারান্দায় অবস্থান করা রোগীর স্বজনরা জানান, অক্সিজেন সংকটের কথা জানতে পেরে তারা হাসপাতালে ছুটে এসেছেন।
এ বিষয়ে জানতে রাত ৮টায় সামেক হাসপাতালের ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করলে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। তবে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. কুদরত ই খোদা জাগো নিউজকে বলেন, বিকেলে হঠাৎ করে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইনের প্রেসার কমে যায়। সন্ধ্যা ৭টার পর অক্সিজেনের গাড়ি এসে পৌঁছায়। এখন সবকিছু ঠিকঠাক চলছে। রাতে অক্সিজেন প্লান্টে নতুন করে ১৪ হাজার লিটার অক্সিজেন ঢুকানো হয়েছে। এখন অক্সিজেন মজুদ রয়েছে।
অক্সিজেনের অভাবে রোগীর মৃত্যু হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মৃত্যুর বিষয়টি জানা নেই। প্রতিদিন সকাল ৮টার পর মৃত্যুর তথ্য প্রকাশ করা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার পর মৃত্যুর আপডেট তথ্য জানানো হবে।