অনুমোদিত গ্যাসের বাইরে সরবরাহ না থাকায় হবিগঞ্জের চারটি সিএনজি ফিলিং স্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে স্টেশনগুলোতে নির্দিষ্ট বরাদ্দের বেশি গ্যাস সরবরাহ করা হতো। তবে এবার জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড কঠোর হওয়ায় গ্যাস সংকটে স্টেশনগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে গ্যাস সংকটের কারণে পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীরা পড়েছেন ভোগান্তিতে।
জানা যায়, হবিগঞ্জ জেলার আটটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মধ্যে অনুমোদিত গ্যাসের অধিক সরবারহ করায় ২৪ জুলাই থেকে শায়েস্তাগঞ্জ ফিলিং স্টেশন, জিএস ব্রাদার্স ফিলিং স্টেশন, মাধবপুরের আল আমিন ফিলিং স্টেশন ও সুশান ফিলিং স্টেশনকে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। এতে খোলা থাকা বাকি চারটি স্টেশনে চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ।
এদিকে চারটি স্টেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অন্য ফিলিং স্টেশনগুলোতে বেড়েছে ভিড়। দীর্ঘক্ষণ ফিলিং স্টেশনগুলোতে যানবাহন নিয়ে অপেক্ষাকেরতে হচ্ছে চালকদের। রাতভর লাইনে দাঁড়িয়েও অনেকেই চাহিদা মতো গ্যাস পাচ্ছেন না। প্রাইভেটকার, মাইক্রোতে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ১৫০ থেকে ২০০ টাকার বেশি গ্যাস দিচ্ছে না স্টেশন কর্তৃপক্ষ। চাহিদামতো গ্যাস দিতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বন্ধ থাকছে গ্যাস সরবরাহ। এতে বাড়ছে ভোগান্তির মাত্রা।
বাহুবল উপজেলার মিরপুর সিটকো স্টেশনে গ্যাস নিতে আসা সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক আকবর আলী বলেন, দুপুরে আসছিলাম এখন রাত ৮টা। গ্যাস কখন পাবো আল্লাহই জানেন।
নবীগঞ্জের আউশকান্দি স্টেশনে আসা সিএনজি অটোরিকশার চালক আকলু মিয়া বলেন, ‘দুপুরে আসছিলাম লাইনে দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে চাহিদামতো গ্যাস পাওয়া যায় না। গ্যাস দেওয়া হয় ১০০-২০০ টাকার। অনেকেই গ্যাস না নিয়ে ফিরে গেছেন।’
গ্যাসের তীব্র সংকটের কারণে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করছেন অতিরিক্ত ভাড়া। সাফিয়া ইয়াছমিন নামে এক যাত্রী বলেন, মিরপুর থেকে হবিগঞ্জ ৩০ টাকা ভাড়া ছিল, এখন ৪০-৫০ টাকা করে সিএনজি চালকরা ভাড়া আদায় করছে।
রোকেয়া বেগম নামে আরেক যাত্রীর অভিযোগ, নবীগঞ্জ থেকে হবিগঞ্জের ভাড়া ৫০ টাকা, কিন্তু বর্তমানে তা বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়েছে। যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
ইন্ট্রাকো সিএনজি স্টেশনের ম্যানেজার মো. হাসান ছারোয়ার মিঠু বলেন, ‘ইতোমধ্যে হবিগঞ্জের চারটি স্টেশন বন্ধ রয়েছে। আমাদের অনুমোদিত গ্যাসও শেষের দিকে। চাহিদামতো সরবরাহ পাচ্ছি না। সবাই যেন চলতে পারে তাই স্বল্প পরিমাণে গ্যাস দেওয়া হচ্ছে।’
জিএস ব্রাদার্স ফিলিং স্টেশন মালিক গাজীউর রহমান গাজী বলেন, সরকারের নির্দেশনা আমরা মেনে নিয়েছি, তবে পরিবহন শ্রমিকদের দুর্ভোগ অনেক বেড়ে গেছে।
এ প্রসঙ্গে জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেডের হবিগঞ্জ আঞ্চলিক বিতরণ কার্যলয়ের প্রধান মো. খালেদ গনি বলেন, ফিলিং স্টেশন করার অনুমোদন নেওয়ার সময় প্রতিটি স্টেশনকে গ্যাসের একটি মাসিক বরাদ্দ নির্ধারিত করে দেওয়া হয়। ফিলিং স্টেশনগুলোর মধ্যে চারটি স্টেশন মাসিক বরাদ্দ শেষ করে ফেলেছে। তাই সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ১ আগস্ট থেকে তারা পুনরায় চালু করতে পারবে।’