আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হলো জোড় ইজতেমা
বাংলাদেশ

আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হলো জোড় ইজতেমা

গাজীপুরের টঙ্গী তুরাগ নদের তীরে তাবলিগ জামাতের শুরা-ই-নেজামের পাঁচ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমা আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৫ মিনিটে শুরু হয়ে শেষ হয় ৯টা ২০ মিনিটে। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন শুরা-ই-নেজামের শীর্ষ মুরুব্বি ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা। এদিকে, পাঁচ দিনে এই ইজতেমায় অংশ নেওয়া চার মুসল্লি মারা গেছেন।

তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ (শুরা-ই-নেজামের) মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মোনাজাতে মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য, দুনিয়া ও আখিরাতের শান্তি, দেশের কল্যাণ, আত্মশুদ্ধি ও গুনাহ মাফের পাশাপাশি দুনিয়ার সব বিপদ থেকে হেফাজত করার জন্য দুই হাত তুলে মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করেন মুসল্লিরা। এ সময় ‘আমিন, আল্লাহুম্মা আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে চারপাশ।

মঙ্গলবার ফজর থেকে হেদায়াতি বয়ান হয়েছে। বয়ান করেন ভারতের (বোম্বে) মাওলানা আব্দুর রহমান। তার বক্তব্য তরজমা করেছেন মাওলানা আব্দুল মতিন সাহেব। এরপর নসিহতমূলক বক্তব্য পেশ করেন ভারতের শীর্ষস্থানীয় মুরুব্বি মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা। তার বক্তব্য তরজমা করেছেন বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়ের। নসিহতমূলক বক্তব্য শেষে হয় আখেরি দোয়া। 

এদিকে, আখেরি মোনাজাতে দোয়ায় শরিক হওয়ার জন্য আশপাশের এলাকা থেকে মুসল্লিরা সকাল থেকে ময়দানে আসা শুরু করেন। এই দোয়ার মাধ্যমে শেষ হলো তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ শুরা-ই-নেজামের পাঁচ দিনব্যাপী জোড়-ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা। দ্বীনের দাওয়াতি কাজ শেষে ফের বিশ্ব ইজতেমায় সময় তারা ময়দানে সমবেত হবেন।

এদিকে, সোমবার পর্যন্ত পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমায় অংশ নেওয়া আরও তিন মুসল্লি মারা গেছেন। এ নিয়ে এবারের জোড় ইজতেমায় চার জন মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। জোড় ইজতেমার আয়োজক শুরা-ই-নেজাম তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের মিডিয়া সমন্বয়কারী হাবিবুল্লাহ রায়হান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ইজতেমা ময়দান মৃত মুসল্লিরা হলেন– রংপুর জেলার কোতয়ালি থানার বৌরাগীপাড়া গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে হায়দার আলী (৩৫), দিনাজপুর সদর থানার মস্তপুর গ্রামের মৃত গোলাম মোস্তফার ছেলে কাউসার আলী (২৮) এবং সিরাজগঞ্জ সদর থানার শহিদুল ইসলাম (৬৫)।

মিডিয়া সমন্বয়কারী হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, ‘রবিবার দুপুরে বুকে ব্যথা অনুভব করলে হায়দার আলীকে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিন কাউসার আলী নামে আরও একজন মারা গেছেন। ইজতেমার চতুর্থ দিনে সোমবার শহিদুল ইসলাম বুকে ব্যথা অনুভব করেন। পরে তার ছেলের মাধ্যমে আশুলিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি মারা যান। সোমবার বাদ ফজর ইজতেমা মাঠে জানাজা শেষে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায় তার পরিবার।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ছাড়াও গত শুক্রবার বাদ আসর ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার দুলালী গ্রামের আব্দুল হামিদ মাতাব্বেরের ছেলে আব্দুল হাকিম আকন্দ (৭২) ইজতেমায় মারা যান। ইজতেমা ময়দানে জানাজা শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ নিয়ে এবারের জোড় ইজতেমায় চার মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে।’

সোমবার তাসবিহ-তাহলিল, জিকির-আসকার ও নফল ইবাদত বন্দেগির মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে জোড় ইজতেমার চতুর্থ দিন। মঙ্গলবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শুরা-ই-নেজামের ৫ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমা।

আরও খবর: দুই পর্বে হবে বিশ্ব ইজতেমা, ঠিক হয়নি কারা আগে

Source link

Related posts

গোলাপগঞ্জে তরুণীকে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’, প্রেমিকসহ গ্রেপ্তার ৪

News Desk

দুমড়েমুচড়ে গেলো প্রাইভেটকার, প্রাণ গেলো চিকিৎসকের

News Desk

যা ঘটেছিল নরসিংদী কারাগারে, যেভাবে পালালেন ৮২৬ বন্দি

News Desk

Leave a Comment