করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তামিল অভিনেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আপাতত দেশেই চিকিৎসা নিতে হবে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানো নিয়ে নানা আলোচনা বা গুঞ্জন থাকলেও সহসাই বিদেশ যাওয়া হচ্ছে না বলে আভাস দিয়েছেন দলের একাধিক নেতা। কারণ তার করোনা নেগেটিভ হয়নি। এ অবস্থায় অনেক দেশে প্রবেশের অনুমতি মিলবে না। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিদেশ নেওয়ার মতো গুরুতর কিনা তাও পরিষ্কার নয়।
এ দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও গতকাল এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে খালেদা জিয়া বা তার পরিবারের পক্ষে কেউ সরকারের কাছে কোনো আবেদন করেননি। তিনি যেন দেশে থেকে সুচিকিৎসা পান, সে ব্যবস্থা প্রধানমন্ত্রী করে দিয়েছেন। এর পরও তিনি যদি আরও কিছু পেতে চান, তাহলে আদালতের মাধ্যমে আসতে হবে।
অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফও গতকাল পৃথক এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় সরকার সব সময় সহায়তা করতে প্রস্তুত। তিনি যেন দেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা পেতে পারেন, সে জন্য সরকার প্রয়োজনীয় সব সহায়তা করে আসছে। তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া করোনাক্রান্ত হওয়ার পর আমরা সবাই উনার সুস্বাস্থ্য কামনা করেছি।
খালেদা জিয়াকে শ্বাসকষ্টের কারণে সিসিইউতে স্থানান্তরের খবরে দলের নেতাকর্মীরা বেশ উৎকণ্ঠায় আছেন। তার শারীরিক অবস্থার প্রকৃত চিত্র তুলে ধরার দাবি জানিয়েছেন তারা। বিএনপির কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা পর্যন্ত বলছেন, দলের চেয়ারপারসনকে যুক্তরাজ্য বা সিঙ্গাপুর নতুবা সৌদি আরবÑ এ তিনটির যে কোনো একটি দেশে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে দল ও নেত্রীর পরিবারের মধ্যে কথা চলছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিতে হলে প্রথমত সরকার, পরে আদালতের অনুমতি লাগবে। পাশাপাশি করোনা আক্রান্ত হওয়ায় সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর কোভিড টেস্টে নেগেটিভ ফল আসতে হবে। সোমবার রাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে বেগম জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে কথা বলেন। ওই কথোপকথনের সূত্র ধরে বেগম জিয়াকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর পাঠানোর গুঞ্জন উঠে, তবে গতকাল পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পরিবার ও বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো আবেদন করা হয়নি। একই কারণে আদালতের বিষয়ে চেয়ারপারসনের আইনজীবীরাও কোনো উদ্যোগ নেননি।
এ বিষয়ে সিঙ্গাপুর কনস্যুলার একটি সূত্র জানিয়েছে, তাদের সঙ্গে বিএনপি বা বেগম জিয়ার পরিবারে কেউ যোগাযোগ করেনি। তবে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুর গেলে তাতে ভিসার প্রয়োজন নেই। সে ক্ষেত্রে সেখানকার হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি লাগবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিষয়টি সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ ভালো জানবেন। সিভিল এভিয়েশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারাও বলেন, এ ব্যাপারে তাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি।
এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গতকাল প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা বৈঠক করেছে। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বৈঠক শেষে চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন এ কথা জানান। এ সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও উপস্থিত ছিলেন। তবে তাদের কেউ খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্ত নিয়ে সাংবাদিকদের কিছু বলতে চাননি।
যদিও গতকাল দুপুরে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘গত সোমবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শ্বাসকষ্ট হওয়ায় সিসিইউতে নেওয়া হয়েছে, তিনি এখনো সিসিইউতে আছেন। তাকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। এখন উনি স্থিতিশীল আছেন। তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ডাক্তাররা অত্যন্ত আশাবাদী তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। আমরা দোয়া চাইছি মহান করুণাময় আল্লাহতায়ালার কাছে, সমগ্র জাতি আজ প্রার্থনা করছেন- এ দেশের স্বাধীনতার শেষ আশ্রয়স্থল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যেন অতি দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।’
আদালতের সম্মতি লাগবে
গতকাল মঙ্গলবার রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা (অ্যাটর্নি জেনারেল) এ এম আমিনউদ্দিন জানিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিয়ে যেতে হলে আদালতের সম্মতি লাগবে। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ (১) ধারা অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়েছে সরকার। এখন এটা (বিদেশ নিতে) করতে গেলে আদালতে আসতে হবে। তিনি আরও বলেন, ওনার (খালেদা জিয়ার) চিকিৎসা কতটুকু প্রয়োজন। বাংলাদেশে কী আছে, না আছে, সবকিছু দেখে সরকার বিবেচনা করবে। সরকার যদি প্রয়োজন মনে করে, যদি আইন অনুযায়ী প্রয়োজন হয়, তা হলে সরকার আদালতে আসবে। কারণ এটা তো সরকারি আদেশ, সরকারই এটা ঠিক করবে।
নির্বাহী আদেশ সংশোধন করে বিদেশে পাঠানো সম্ভব : বিএনপি
খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এ প্রসঙ্গে বলেন, সরকারের দিক থেকে সবুজ সংকেত পেলে আমরা আদালতে যাব। এর আগে আদালতে গিয়ে লাভ কি? প্রশ্ন রাখেন তিনি। বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, ম্যাডামকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া জরুরি। উপায় একটাইÑ সরকারকে তার দেওয়া নির্বাহী আদেশ সংশোধন করে বিদেশে যাওয়ার ওপর বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা। বিদেশে পাঠাতে হলে আর কোনো অপশন নেই। এভাবে দল বা পরিবার বা আইনজীবীদের তো করণীয় কিছু নেই।
তিনি বলেন, সরকার তো সাম্প্রতিক সময়ে অনেকের সাজা ক্ষমাও করে দিয়েছে। সেখানে খালেদা জিয়া দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিক। তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে দিতে সমস্যা কোথায়? এর আগে গত বছরের মার্চে বিদেশে চিকিৎসার জন্য মুক্তি চেয়ে স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছিল খালেদা জিয়ার পরিবার। খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম তখন বলেছিলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে এই চিঠিতে আমরা লিখেছি যে, বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য আমরা পরিবারের সদস্যরা তাকে বিদেশে নিয়ে যেতে চাইছি। সেজন্য তার মুক্তি প্রয়োজন। তাকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার জন্য মানবিক কারণে মুক্তির বিষয়টি বিবেচনা করা হোক।’
তখন খালেদা জিয়াকে লন্ডনে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছিল বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানা গেছে। এখন বিএনপি নেতারা বলছেন ওই আবেদনের ভিত্তিতেই সরকার মুক্তির আদেশ সংশোধন করলে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়া সম্ভব হবে। স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, গত সোমবার ছিল একটি আতঙ্কের বাংলাদেশ। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সিসিইউতে যাওয়ার ঘটনায়। যিনি সংসদীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিলেন, কয়েকবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া- এই নেত্রীর চিকিৎসার ব্যাপারে সরকার যদি উদাসীন থাকে, যদি তার চিকিৎসা নিয়ে পরিবারের লোকজনকে ব্যস্ত থাকতে হয়- এর মতো দুঃখজনক ঘটনা আর কিছুই হতে পারে না। চিকিৎসার ব্যাপারে সরকারের কাছে অনুমতি নিতে হয়। এ তালা যদি ভাঙতে না পারি, আমাদের কিন্তু বড় বড় পদ-পদবি নিয়ে কলঙ্ক নিয়ে বিদায় নিতে হবে।
সর্বশেষ স্বাস্থ্য পরিস্থিতি
গতকাল রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের অন্যতম সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান, বিএনপির শীর্ষনেত্রীর অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। অধ্যাপক জাহিদ বলেন, গতকাল ও আজ সকালে খালেদা জিয়ার যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়েছিল, সেগুলো আজ রিভিউ করেছেন মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা। তারা কিছু পরিমাণ ট্রিটম্যান্ট করেছেন, কিছু অ্যাডজাস্টমেন্ট করেছেন। সেই অনুযায়ীই ওনার চিকিৎসা চলছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের রোগমুক্তির জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়ার অনুরোধ জানান ডা. জাহিদ।র ভাই। ভারতের উত্তরপ্রদেশের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে। ভেন্টিলেটর সাপোর্টের প্রয়োজন ছিল তার। ভাইয়ের জন্য ভেন্টিলেটর সাপোর্টের সন্ধান চালাচ্ছিলেন নায়িকা। এরই মধ্যে ভাইয়ের মৃত্যুর সংবাদ জানান পিয়া।
মঙ্গলবার সকালে ভাইয়ের স্বাস্থ্য সম্পর্কে আপডেট দিয়ে সামাজিক মাধ্যমে পিয়া জানিয়েছেন, ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করতে পারছেন না। শেষ নিঃশ্বাস গুনছে তার ভাই। এরপরই মৃত্যুর খবর জানিয়ে টুইট করেন নায়িকা।
২০০৮ সালে ‘পোই সোল্লা পরম’ দিয়ে তামিল ইন্ডাস্ট্রিতে অভিনয় শুরু করেন পিয়া বাজপেয়ী। ‘আইগান’ এবং ‘কো’ সিনেমায় অভিনয় করে দারুণ খ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি। তেলুগু, মালায়লম, হিন্দি এবং ইংরেজি সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন তিনি।