‘আসামির সঙ্গে পুলিশের নৈশভোজের’ ছবি তোলায় বিএনপি নেতাকর্মীকে লাঠিপেটা, দুই ওসি প্রত্যাহার
বাংলাদেশ

‘আসামির সঙ্গে পুলিশের নৈশভোজের’ ছবি তোলায় বিএনপি নেতাকর্মীকে লাঠিপেটা, দুই ওসি প্রত্যাহার

লালমনিরহাট সদরে হত্যাচেষ্টা মামলার এক ‘আসামির সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাদের নৈশভোজের’ ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে লাঠিপেটায় বিএনপির পাঁচ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় সদর থানার ওসি ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে উপজেলার মোস্তফীহাট এলাকার আখেরুল ইসলামের একটি হিমাগারে লাঠিপেটার ঘটনা ঘটে। 

আখেরুল ইসলাম উপজেলার গোকুণ্ডা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি। তিনি ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যাচেষ্টার মামলার আসামি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আহতদের মধ্যে গোকুণ্ডা ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান নয়ন (৩৬) এবং ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বিপ্লব হোসেন (২৫) সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকিদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, মঙ্গলবার রাতে রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলীসহ লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার মো. তরিকুল ইসলাম, সদর থানার ওসি আব্দুল কাদের এবং জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি ফিরোজ হোসেন ওই হিমাগারে নৈশভোজে অংশ নেন।

গোকুণ্ডা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলতাব হোসেন বলেন, হিমাগারে মামলার আসামির সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাদের নৈশভোজের খবর পেয়ে স্থানীয় যুবদলের দুই কর্মী সেখানে গিয়ে মোবাইলে ছবি তোলার চেষ্টা করেন। ছবি তুলতে বাধা দেওয়ার সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। খবর পেয়ে বিএনপির আরও কিছু নেতাকর্মী ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিপেটা শুরু করেন। এতে পাঁচ জন আহত হন। পরে রাত ১টার দিকে লাঠিপেটার প্রতিবাদে বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ লালমনিরহাট-কুড়িগ্রাম সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা সড়কের পাশে একটি চায়ের দোকান এবং আখেরুল ইসলামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালায়। আসামির সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাদের নৈশভোজ নৈতিকতা পরিপন্থি। আমাদের নেতাকর্মীদের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে লাঠিপেটা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তি চাই।

স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুস সাত্তার বলেন, মাদকসহ একাধিক মামলার আসামি আখেরুল ইসলামের হিমাগারে পুলিশের রংপুর, কাউনিয়া ও লালমনিরহাটের শীর্ষ কর্মকর্তারা দাওয়াতে অংশ নেন।

প্রত্যাহার হওয়া লালমনিরহাট সদর থানার ওসি আব্দুল কাদের বলেন, যারা আমাদের খাওয়া-দাওয়ার ছবি তুলছিলেন, তারা মাদককারবারি। তাদের আটক করে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পরে সড়ক অবরোধকারীদের লাঠিপেটা করেছি যানচলাচলের স্বার্থে। আমরা বিএনপির কোনও নেতাকর্মীর ওপর লাঠিপেটা করিনি। আর আখেরুলকে আমরা চিনতাম না। সে যে হত্যা মামলার আসামি সেটাও জানা ছিল না।

ডিবির ওসি ফিরোজ হোসেনের সঙ্গে কথা বলতে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে, তিনি ফোন ধরেননি।

জেলা পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম বলেন, অনুষ্ঠানে রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার আসার কারণে আমাকে যেতে হয়েছিল। আর অনুষ্ঠানে কেউ হত্যা মামলার আসামি ছিল কিনা সেটি জানা ছিল না। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। এ ঘটনায় সদর থানা ও ডিবির ওসিকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে যুক্ত করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ ছাড়া ঘটনাটি তদন্তে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Source link

Related posts

চারবার সময় বাড়িয়ে ১৩৬ কোটি টাকার সেতুর কাজ হলো অর্ধেক

News Desk

দাম বেশি পাওয়ায় ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা

News Desk

দেশে করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যু দুটোই কমেছে

News Desk

Leave a Comment