বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের প্রকৌশলী বলেন, সিলেট বিভাগের বন্যা পরিস্থিতি আরও দুই-তিন দিন অবনতি হতে পারে। উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতিও দ্রুত খারাপ হতে পারে। কারণ, উজানে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে
আগামী তিন দিন বাংলাদেশের উজানে ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে এবং বাংলাদেশ অংশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা আছে। সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাসে এমনটিই জানানো হয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের হিসাবে, শুক্রবার (১৭ জুন) সকাল থেকে সিলেট বিভাগের সব কটি নদ–নদীর পানি ও উত্তরাঞ্চলে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। দেশের বিভিন্ন নদ–নদীর ১০৬টি পয়েন্টের মধ্যে ৮৬টির পানি বাড়ছে, ২০টির কমছে।
অন্যদিকে দেশের উত্তরাঞ্চলের প্রধান নদী তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি দ্রুত বাড়ছে। এরই মধ্যে তিস্তা অববাহিকার চারটি জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হতে পারে বলে মনে করছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। ব্রহ্মপুত্রের পানি যমুনা দিয়ে নামার সময় তিন–চার দিনের মধ্যে বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল পর্যন্ত বন্যার পানি চলে আসতে পারে।
সামগ্রিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে-বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলোকে বলেন, সিলেট বিভাগের বন্যা পরিস্থিতি আরও দুই-তিন দিন অবনতি হতে পারে। উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতিও দ্রুত খারাপ হতে পারে। কারণ, উজানে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে, বাংলাদেশের ভেতরেও বৃষ্টি চলছে।
এদিকে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের (আইএমডি) বরাত দিয়ে হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের চেরাপুঞ্জি বিশ্বের সবচেয়ে বৃষ্টিপ্রবণ এলাকা। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ৯৭২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা জুন মাসে ১২২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। আর গত তিন দিনে সেখানে প্রায় আড়াই হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এটিও গত ২৭ বছরের মধ্যে তিন দিনে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, চেরাপুঞ্জিতে আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে। অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্রের উজানে আসামে গুয়াহাটিতে ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে। ওই দুই এলাকার ভাটি এলাকা হিসেবে বাংলাদেশের সিলেট ও কুড়িগ্রামে ওই পানি নামা শুরু করবে। এর আগে থেকেই ওই এলাকায় এমনিতেও বৃষ্টি বেশি ছিল। এর সঙ্গে নতুন পানি যোগ হয়ে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকাজুড়ে আজ সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। রাজধানীতে আজ দুপুর পর্যন্ত ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। দেশের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে রংপুরে ১০৯ মিলিমিটার। আগামী ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল ও খুলনা বিভাগের কয়েকটি স্থানে এবং দেশের বাকি এলাকার বেশির ভাগ স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে উত্তরাঞ্চল ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।