ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। আর সেই আনন্দ উপভোগ করতে পরিবার নিয়ে ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকেই দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার পরিচিত প্রবেশদ্বার মুন্সীগঞ্জ মাওয়া শিমুলিয়া ঘাট পল্টুন কেন্দ্রগুলোয় ভিড় করে আসছিল যাত্রীরা, ঈদের দিন পর্যন্ত। ঈদের দিন কিছুটা যাত্রী চাপ কমলেও ফের চাপ বাড়ছে শনিবার ঈদের দ্বিতীয় দিনেও। এখন উভয়মুখী মানুষের ঢল নেমেছে মাওয়ায়। ১৩ ফেরি দিয়ে পারপার করছে বিআইডব্লিটিসি কর্তৃপক্ষ।
শনিবার ভোর রাত থেকে ঈদের দ্বিতীয় দিনও যাত্রীরা প্রিয়জন ও আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে ভিড় জমিয়েছে ঘাটে হাজারো যাত্রী, দূর-দূরান্ত থেকে ঈদ উদযাপনে ছুটে আসছেন অনেকেই। প্রচণ্ড গরম আর দীর্ঘ লাইন সত্ত্বেও ঘাটের ফেরি পল্টুন মুখি। শিশু-কিশোর-বৃদ্ধ সবাই আসছেন প্রতিযোগিতা করে ফেরি পার হওয়ার জন্য। আর এতে করে উৎসবের আমেজ আরেকটু বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করছেন ফেরি পার হওয়া যাত্রীরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি বছরের মতো এবারো ঈদের ছুটিতে পূর্ণ হয়ে ওঠেছে ঘাট এলাকা।
এ বছরও করোনাকালীন রোজা পালন করেছে দেশের মানুষ। ভাইরাসটি দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ শঙ্কা মাথায় রেখেই এবারের ঈদ উদযাপন করা হয়। এ বিষয় গত এক সপ্তাহ আগে থেকেই প্রতিদিন ভোর রাত হলেই পদ্মা পাড়ি দেয়ার জন্য ছুটে চলছে আপন গতিতে শিমুলিয়া ফেরি ঘাট হয়ে, তবে এবার যাত্রীদের জন্য পাশাপাশি নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। অন্য দিকে যাত্রী পারাপার সামাল না দিতে পেরে নিম্ন আয়ের মানুষরা বেছে নিচ্ছে সরকার শিমুলিয়া বাংলাবাজার নৌপথে ফেরি পারাপার। নিরাপত্তা নিশ্চিতে সিসি ক্যামেরা, পোশাকে-সাদা পোশাকে নিরাপত্তা প্রহরী আর আনসার সদস্যের পাশাপাশি পুলিশও বিজিবি সদস্য রয়েছে।
সামনে আরো সাত দিনের লকডাউনে আটক যাবে মানুষ সেই লকডাউনের আগেই বাড়িতে যেতে চাচ্ছেন এই সকল যাত্রী। ঈদুল ফিতর পালন করে উভয় মুখি মানুষের ঢল নেমেছে এখন মাওয়া শিমুলিয়া ঘাটে। ব্যক্তিগত গাড়ি এবং ভাড়া করা প্রাইভেটকার ছুটছে প্রত্যেকে প্রত্যেকের গন্তব্যে। কেউ ঢাকায় তো কেউ দক্ষিণাঞ্চলের যেকোনো জেলায়।
বাংলাবাজার থেকে যে ফেরিগুলো মুন্সীগঞ্জ মাওয়া শিমুলিয়া এসে ভিড়ছে সেগুলোতেও ঢাকামুখি যাত্রী ভর্তি। গাদাগাদি করে ফিরছে ঢাকায়। সামনে সরকারের সাত দিনের লকডাউন ঘোষণায় চাকরিজীবিরা ফিরতে শুরু করেছে ঢাকায়। ফলে মাওয়া শিমুলিয়া ঘাটে এখন গরমে হাজার হাজার লোকের সমাগম হয়েছে। সমান তালে মাওয়া ঘাটে যেমন লোকজন নামছে তেমনি করে দৌড়ে দৌড়ে যাত্রীরা ফেরিতে উঠছে। মুহূর্তের মধ্যে ফেরি ভরে যাচ্ছে যাত্রী এবং প্রাইভেটকারে। এ দিকে বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটের বহরে আরো দুটি ফেরি যুক্ত হয়েছে। রোরো ফেরি বীর শ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর ও ডাম্প ফেরি রাণীক্ষেত। ঈদের দিন বহরের ১৮ ফেরি সচল ছিল। শনিবার ১৩টি ফেরি চলাচল করছে।
বিআইডব্লিউটিসির ম্যানেজার আহাম্মদ আলী জানান, ঈদের দিনও ঘরমুখো মানুষকে পার করা হয়েছে। একটি ফেরি ছেড়েছে শুধু যাত্রী নিয়ে। বেশ কিছু কারও পার করা হয়েছে।
বিআইডাব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সাফায়েত আহমেদ জানান, শুক্রবার ও শনিবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় যাত্রীদের চাপ বেড়েছে অনেক। যানবাহন ও যাত্রীদের নির্বিঘ্নে পারাপারে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে এ নৌরুটে বর্তমানে ১৩টি ফেরি চলাচল করছে।