ঈদে সাজেকে ঢল নামবে পর্যটকের, সব রিসোর্ট আগাম বুকিং
বাংলাদেশ

ঈদে সাজেকে ঢল নামবে পর্যটকের, সব রিসোর্ট আগাম বুকিং

এবার ঈদের ছুটিতে রাঙামাটিতে পর্যটকের ঢল নামবে বলে আশা করছেন পর্যটন-সংশ্লিষ্টরা। সেজন্য চাপ সামলাতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলা শহরের অধিকাংশ আবাসিক হোটেল-মোটেল ও সাজেকের সব রিসোর্ট-কটেজ ইতোমধ্যে আগাম বুকিং দিয়েছেন পর্যটকরা। হোটেলগুলোতে কোনও কক্ষ খালি নেই। ১২ থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত এসব হোটেল-রিসোর্টের সব কক্ষ বুকিং হয়েছে বলে জানালেন মালিকরা।

রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল ফিতর, পাহাড়ের প্রাণের উৎসব বৈসাবি ও বাংলা নববর্ষের টানা ছুটিতে রাঙামাটিতে পর্যটকের ঢল নামবে। ইতোমধ্যে সাজেকের সব রিসোর্ট-কটেজ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। শুক্রবার থেকে কোনও কক্ষ খালি নেই। এ অবস্থায় বুকিং ছাড়া কোনও পর্যটক সাজেক ভ্রমণ করলে তাদের খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে হবে। এর আগেও টানা ছুটিতে রিসোর্ট-কটেজে কক্ষ না পেয়ে শত শত পর্যটক রাস্তায় রাত কাটিয়েছেন। এছাড়া বার্গী লেক ভ্যালি, নীলাঞ্জনা রিসোর্ট, বড়গাং ও রাঙাদ্বীপের বেশিরভাগ কটেজ বুকিং হয়ে গেছে। কাপ্তাই হ্রদ ঘিরে গড়ে ওঠা রিসোর্ট-কটেজগুলোও বুকিং হয়েছে। তবে শহরের আবাসিক হোটেল-মোটেলগুলো প্রত্যাশার তুলনায় কম বুকিং দিয়েছেন পর্যটকরা। এগুলোর কক্ষ বুকিং এখনও চলছে।

সাজেকের রুইলুই ভ্যালির রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতি জানায়, বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নে রুইলুই পর্যটনকেন্দ্রে বর্তমানে ১১৬টি রিসোর্ট-কটেজ আছে। এতে তিন হাজারের বেশি অতিথি থাকতে পারেন। ইতোমধ্যে সবগুলো রিসোর্ট-কটেজের সব কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। এখানে কয়েক হাজার পর্যটক আসবেন বলে জানিয়েছেন তারা। পর্যটকদের বরণে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা।

সাজেকের মেঘ মাচাং রিসোর্টের ম্যানেজার রকি দে বলেন, ‘আমাদের রিসোর্টের সব কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে। আগামী ১১ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বুকিং আছে। এরপর থেকে কেউ বুকিং দিলে নেওয়া হচ্ছে।’

একই কথা জানিয়েছেন সাজেকের হাতংটং রিসোর্টের মালিক অচিন্ত্য ত্রিপুরা। তিনি বলেন, ‘আমাদেরসহ সাজেকের সব রিসোর্ট-কটেজের কক্ষ শতভাগ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। আমার রিসোর্টে ১২, ১৩, ১৪ ও ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত শতভাগ কক্ষ বুকিং আছে। বুকিং হিসাবে সাজেকে এবারের ঈদে পর্যটকের ঢল নামবে।’

সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ণ বেদ বর্মন বলেন, ‘আমাদের সমিতির আওতায় ১১৬টি রিসোর্ট-কটেজ আছে। এগুলোতে তিন হাজারের বেশি পর্যটক থাকতে পারেন। এবার ঈদুল ফিতর, বৈসাবি ও বাংলা নববর্ষের টানা ছুটিতে পর্যটকের ঢল নামবে। এজন্য পর্যটকরা আগাম বুকিং দিয়েছেন। বিগত ছুটিতেও রিসোর্ট-কটেজে কক্ষ না পেয়ে শত শত পর্যটক রাস্তায় রাত কাটিয়েছেন। অনেকে কষ্ট পেয়ে ফিরে গেছেন। ফলে আমরা বরাবরই অনুরোধ করে আসছি, আগাম কক্ষ বুকিং দিয়ে যেন পর্যটকরা আসেন। তাহলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় না।’

রাঙামাটি শহরের আবাসিক হোটেল-কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি মো. মঈন উদ্দিন সেলিম জানিয়েছেন, অন্যান্য বারের তুলনায় এবার ছুটি বেশি। তাই অগ্রিম বুকিং বেশি হয়েছে।

পর্যটক পরিবহনে প্রস্তুতির কথা জানিয়ে সাজেক জিপ গাড়ি পরিবহন সমিতির লাইনম্যান ইয়াছিন আরাফাত বলেন, ‘এবার রমজানে পর্যটক কম ছিল। এ সময়ে গাড়িগুলোর ত্রুটি সেরে নেওয়া হয়েছে। সমিতির আওতায় ১৭৫টি গাড়ি আছে। সবগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঈদের দিন থেকে এগুলো চালু করা হবে।’

পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি থানা পুলিশও দায়িত্ব পালন করবে বলে জানিয়েছেন বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার। তিনি বলেন, ‘এবার টানা ছুটিতে সাজেকে প্রচুর পর্যটক আসবেন। সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। পর্যটকদের সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই সময়ে সড়কে যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে, সেজন্য জিপ গাড়ির মালিকদের বলা হয়েছে, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। সেইসঙ্গে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল করলে পুলিশকে আইনি ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’

Source link

Related posts

সিলেট বিভাগে বন্যা আক্রান্ত ১৩ লাখ মানুষ

News Desk

প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি: বিএনপি নেতা চাঁদের জামিন নামঞ্জুর

News Desk

আত্মগোপনে মতিউরের স্ত্রী, উপজেলা চেয়ারম্যান হয়ে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়

News Desk

Leave a Comment