শুরু হওয়ার পর নানা জটিলতায় দীর্ঘ ৭ বছর পর শেষ হয়েছে রাজশাহী শিশু হাসপাতালের নির্মাণকাজ। এরপর পেরিয়েছে আরও ৯ মাস। তবুও চালু হচ্ছে না রাজশাহী অঞ্চলের মানুষের বহুল প্রত্যাশিত বিশেষায়িত এই হাসপাতাল। প্রশাসনিক জটিলতার জটে আটকে আছে হাসপাতাল চালু হওয়ার সুখবর!
সংশ্লিষ্ট দফতরের তথ্যমতে, রাজশাহী নগরীর বহরমপুর টিবিপুকুর সংলগ্ন এলাকায় শিশু হাসপাতালের চারতলা ভবনের নির্মাণকাজ ২০১৫ সালের মে মাসে শুরু হয়েছিল। ১৩ কোটি টাকার প্রাক্কলিত ব্যয়ে শুরু হওয়া হাসপাতালটির কাজ শেষ হয়েছে ৩৪ কোটি টাকায়। কয়েক দফা মেয়াদ ও ব্যয় বেড়ে ২০২২ সালের শেষের দিকে নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত ২৯ জানুয়ারি হাসপাতালটির উদ্বোধনও করা হয়। কিন্তু কাকে, কীভাবে দায়িত্ব দেওয়া হবে—এই প্রশ্নের উত্তরে থমকে আছে।
গণপূর্ত বিভাগের তথ্যমতে, হাসপাতালটির প্রথম তলায় ১৪ শয্যার জেনারেল অবজারভেশন ইউনিট রয়েছে। এক্স-রে করানোর জন্য দুটি এবং সিটি স্ক্যান ও এমআরআই করানোর জন্য একটি করে কক্ষ রয়েছে সেখানে। স্টোর হিসেবে রয়েছে আটটি কক্ষ। নিচতলায় একসঙ্গে ২০টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। দ্বিতীয় তলায় রয়েছে একটি মাইনর ওটি ও চারটি বিশেষায়িত ওটি। এ ছাড়া ১০ শয্যার প্রি ও পোস্ট ওটি এবং ৫৬ শয্যার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)। তৃতীয় তলায় চিকিৎসকের জন্য করা হয়েছে ১৮টি কক্ষ। চতুর্থ তলায় রয়েছে ৯৬ শয্যার সাধারণ ওয়ার্ড এবং ১৮টি পেইড শয্যা। এ ছাড়া রোগীদের ওঠানামার জন্য উন্নতমানের দুটি লিফট রয়েছে। কাজ শেষ হলেও হাসপাতালটি কোন দফতরের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে নির্দেশনার অপেক্ষায় গণপূর্ত বিভাগ।
হাসপাতাল নির্মাণকাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২ এর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম খান বলেন, ‘নির্মাণকাজ শেষ হয়ে প্রথম দফার করা রং উঠে যাওয়ায় এক মাস আগে আবারও করালাম। কিন্তু হাসপাতাল কেউ বুঝে নিচ্ছেন না। রামেক হাসপাতাল, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতর, নাকি অন্য কেউ—কে এই হাসপাতাল বুঝে নেবে সে বিষয়েও কোনও নির্দেশনা আসেনি।’
এ বিষয়ে রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক আনোয়ারুল কবীর বলেন, ‘হাসপাতালের কাজ শেষ হওয়ার বিষয়টি আমরা জানি। গণমাধ্যমেও এ বিষয়টি উঠে আসছে। এ বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদফতরকে জানানো হয়েছে। আশা করছি খুব শিগগিরই নির্দেশনা আসবে।’