গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনের উপনির্বাচনে অনিয়ম তদন্তে নির্বাচন কমিশন গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের মতো শুনানি গ্রহণ করেছে। শুনানির শেষ দিনে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত গাইবান্ধা সার্কিট হাউজে ২৭ জনের শুনানি গ্রহণ করে তদন্ত কমিটি।
টানা তিন দিনের শুনানিতে অংশ নিতে কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট ৬৮৫ জনকে ডাকা হলেও মোট ৬২২ জনের উপস্থিতি ও বক্তব্য নেওয়ার কথা জানিয়েছে কমিটি।
বৃহস্পতিবার সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে ২৭ জনের বক্তব্য শোনে তদন্ত কমিটি। তাদের মধ্যে ছিলেন উপনির্বাচনের পাঁচ জন প্রার্থী, ১৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বিজিবি ও র্যাবের কমান্ডিং কর্মকর্তা, রিটার্নিং কর্মকর্তা, রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার।
তিন দিনে কেন্দ্র সংশ্লিষ্টদের এই শুনানি গ্রহণ করেন ইসির গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ এবং দুই সদস্য যুগ্মসচিব মো. কামাল উদ্দিন বিশ্বাস ও মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী।
উপনির্বাচনের পাঁচ প্রার্থী তাদের লিখিত বক্তব্য তদন্ত কমিটির কাছে জমা দিয়েছেন।
শুনানিতে অংশ নিয়ে ফিরে যাবার সময় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন জানান, তিনি কমিটির কাছে এলাকার নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে এমন দাবি করে যে ৫১ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বন্ধ করা হয়েছিল সেগুলো বাদে বাকী ৯৪ কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী গোলাম শহীদ রঞ্জু বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন বন্ধ ও তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে কমিশন সিদ্ধান্ত দিবেন এমনটা আশা করি। তাদের প্রতি আমাদের আস্থা আছে।
বিকল্পধারার প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম অনিয়মের অভিযোগে ভোট বন্ধ করা ৫১ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এবং অনিয়ম বিশৃঙ্খলার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
স্বতন্ত্র দুই প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ (আপেল) এবং সৈয়দ মাহবুবুর রহমান (ট্রাক) বলেন, নির্বাচনে যা ঘটেছে তা গণমাধ্যমকর্মীসহ সবাই দেখেছে। তদন্ত কমিটি আমাদের কাছে যা জানতে চেয়েছে আমরা তা জানিয়েছি। এলাকার উন্নয়নের জন্য দ্রুত এই আসনে নির্বাচন দাবি করি।
শেষ দিনে তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ১৭ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বিজিবি ও র্যাবের দুই কমান্ডিং কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে জেলা প্রশাসক মো. অলিউর রহমান ও পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকর্মীর বলেন, ভোটের দিন সার্বিকভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন তারা। ইসির নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করেছেন।
শুনানির কার্যক্রম শেষে সার্কিট হাউজে তদন্ত কমিটির প্রধান অশোক কুমার দেবনাথ গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, তিন দিনের শুনানিতে অংশ নিতে ৬৮৫ জনকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তাদের মধ্যে ৬২২ জন উপস্থিত হয়েছেন। বাকী যারা উপস্থিত হননি তারা সবাই বিভিন্ন প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট। আমরা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবো। এছাড়া অন্য কোনও বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি তিনি।