গৃহহীন ও ভাসমান অবস্থায় অন্যের জমিতে বসবাস করতে হয়েছে বছরের পর বছর। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর জীবনে পাকা ঘর হবে—এমন আশা ছিল না কখনও। আজ তাদের ঠাঁই হয়েছে পাকা ঘরে। নিজের একটা বাড়ি হয়েছে, সেই বাড়িতে এবার ঈদ করবেন নুর মোস্তফা।
কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা মিনা বাজারে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়েছেন নুর। নতুন ঘরে ঈদ করবে বলে উচ্ছ্বসিত তিনি ও তার পরিবার।
নুর মোস্তফা বলেন, ‘আগে আমার ঘর ছিল না। অনেক কষ্টে ছিলাম। সরকার আমাকে ঘর দিয়েছে। এতদিন নিজ ঘরে ঈদ করতে পারিনি। এবার নিজ ঘরে ঈদ করবো। এর চেয়ে আনন্দের কী হতে পারে। পাকা বাড়িতে থাকার কথা স্বপ্নেও ভাবিনি। কিন্তু সেই স্বপ্নপূরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা তার কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টেকনাফ উপজেলায় এ পর্যন্ত ৩০২ গৃহহীন পরিবারকে উপহারের ঘর দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৪০ পরিবার নতুন ঘরে প্রথমবারের মতো ঈদ করবেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নিজ ঘরে প্রথমবারের মতো ঈদ উদযাপনের সব প্রস্তুতি শেষ করেছেন এসব পরিবারের বাসিন্দারা। তাদের আনন্দের সীমা নেই। উপহারের ঘর পেয়ে বদলে গেছে তাদের জীবনযাত্রা।
একসময় নাফ নদের বেড়িবাঁধের ওপর বসবাসকারী রেহেনা বেগমের এবার ঠাঁই হয়েছে উপহারের পাকা ঘরে। তিনি বলেন, ‘আগে ভাঙা ঝুপড়ি ঘরে বৃষ্টিতেই ভিজতাম, রোদে শুকাতাম। মেরামতের সামর্থ্য ছিল না। পাকা ঘর পাওয়া আমার কাছে স্বপ্নের মতো। নিজের ঘরে ঈদ করবো এবার। খুশির শেষ নেই। প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আল্লাহ তাকে যুগ যুগ বাঁচিয়ে রাখুক।’
এদিকে, গৃহহীনদের মাঝে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দিতে ইতোমধ্যে সবার ঘরে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার পৌঁছে দিয়েছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কায়সার খসরু।
ইউএনও কায়সার খসরু বলেন, ‘প্রথমবারের মতো তারা নিজেদের পাকা ঘরে ঈদ করতে পারছেন, এটি তাদের জন্য অবশ্যই অনেক আনন্দের। অসহায় পরিবারগুলোর কাছে এটি বেঁচে থাকার নতুন অবলম্বন। তাদের মাঝে ঈদের খুশি ছড়িয়ে দিতে প্রধানমন্ত্রীর ঈদসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে টেকনাফে গত ২৬ এপ্রিল তৃতীয় দফায় ৪০ গৃহহীন পরিবারকে ঘর দেওয়া হয়েছে। এর আগে দুই দফায় উপজেলার ২৬২ পরিবারকে জমিসহ ঘর উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এসব ঘরে দুটি থাকার রুম, একটি বাথরুম, রান্না ঘর ও বারান্দা রয়েছে। ঘরগুলো নজর কেড়েছে সবার।