নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে অমর শীল নামে এক ভুয়া চিকিৎসককে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একইসঙ্গে ভুয়া চিকিৎসার কারণে রোগীদের জীবন ও নিরাপত্তা বিপন্ন করার অপরাধে জেনারেল মা ও শিশু হসপিটাল কর্তৃপক্ষকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
শনিবার (১৯ আগস্ট) বিকালে এ অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসির আরাফাত। অভিযানে সহযোগিতা করেছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ। দণ্ডপ্রাপ্ত অমর শীল (৩৫) চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার উলিপুর গ্রামের গৌরেন্দ্র শীলের ছেলে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, চৌমুহনী পৌরসভার পাবলিক হল এলাকার জেনারেল মা ও শিশু হসপিটালে অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় হসপিটালের নিচতলায় চেম্বারে ‘সহকারী অধ্যাপক (বিএসএমএমইউ), এমবিবিএস, এফসিপিএস, ডিডিভি স্পেশাল ট্রেনিং ইন ডার্মাটোলজি (থাইল্যান্ড)’-এর ডিগ্রিধারী পরিচয়ে রোগী দেখছিলেন মো. এনামুল হক নামের এক ব্যক্তি। ভ্রাম্যমাণ আদালতের জিজ্ঞাসাবাদে এনামুল জানান, তার প্রকৃত নাম অমর শীল। ২০০৩ সালে বলাখাল জেএন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে থেকে এসএসসি ও ২০০৫ সালে হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এর বেশি পড়াশোনা করেননি। এই হসপিটালে চার মাস ধরে চেম্বার করছেন। এর আগে মাইজদীর ট্রাস্ট ওয়ান হসপিটালে চেম্বার করতেন। দুই হসপিটালে গত চার ধরে বহু রোগী দেখেছেন তিনি।
পরে জেনারেল ও শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এনামুল নামধারী ওই চিকিৎসকের সঙ্গে চুক্তিপত্র ও সার্টিফিকেট ডিগ্রির সনদপত্র দেখাতে পারেনি। এনামুল প্রতিদিন ৩০-৩৫ জন রোগী দেখতেন। প্রতি রোগীর কাছ থেকে ৭০০ টাকা ভিজিট নিতেন। তথ্য-প্রমাণ ও স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। সেইসঙ্গে হসপিটাল কর্তৃপক্ষকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসির আরাফাত বলেন, ‘চার বছর ধরে বহু রোগী দেখেছেন ওই ভুয়া চিকিৎসক। তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।’