চাহিদার তুলনায় আমদানি কমের অজুহাতে একদিনের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে আবারও বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। কেজি প্রতি বেড়েছে ৫ টাকা। হঠাৎ দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন পেঁয়াজ কিনতে আসা পাইকাররা। অনেকে না কিনে শুধু বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন। ভারতের বাজারে দাম বাড়ার কারণে দেশের বাজারে দাম বাড়ছে দাবি বন্দরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের।
হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। আগে ইন্দোর ও নাসিক জাতের পেঁয়াজ আমদানি হলেও বর্তমানে শুধুমাত্র ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। বন্দরে ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা একদিন আগেও ছিল ৪৯ থেকে ৫০ টাকা।
হিলি স্থলবন্দরে পেঁয়াজ কিনতে আসা পাইকার ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আমদানি কমের অজুহাতে গত বৃহস্পতিবার থেকেই হিলি স্থলবন্দরে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। কয়েক দিনের ব্যবধানে দাম বাড়তে বাড়তে ৪৩ থেকে ৪৪ টাকার পেঁয়াজ বর্তমানে ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা। গতকাল একদিনের ব্যবধানে কেজিতে আবারও ৫ টাকা বেড়েছে। দাম বাড়ার কারণে আমরা বন্দর থেকে পেঁয়াজ কিনে যেসব মোকামে সরবরাহ করি সেখানকার ক্রেতারা পেঁয়াজ কেনা বন্ধ করে দিয়েছেন। তারা বর্তমানে বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। যার কারণে ক্রয় আদেশ না থাকায় গতকাল বন্দর থেকে কোনও পেঁয়াজ কিনতে পারিনি। আজ দেখি পরিস্থিতি কী হয়। যদি ক্রয় আদেশ পাই তাহলে হয়তো কিনে মোকামে পাঠাবো।’
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সেলিম হোসেন বলেন, ‘দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রেখেছেন বন্দরের আমদানিকারকরা। তবে গত তিন চার দিন ধরেই বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করছে। কখনো ঝড় কখনো বৃষ্টি—যার কারণে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ করে যেসব অঞ্চলে পেঁয়াজ আবাদ হয় সেখানকার কৃষকরা ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলতে পারছেন না। এতে করে ভারতের মোকামগুলোতেই পেঁয়াজের সরবরাহ কমায় দাম খানিকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈরি আবহাওয়ার কারণে গাড়ি ভাড়াও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাড়তি দামে পেঁয়াজ আমদানির কারণে দেশের বাজারেও পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। সেইসঙ্গে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি কমে গেছে। এতে করে দেশের বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমায় দাম কিছুটা বেড়েছে।’ আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে এবং বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি বাড়লে দাম কমে আসবে বলেও জানান তিনি।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তবে পরিমাণ আগের তুলনায় অনেকটা কমে এসেছে। আগে ৪০ থেকে ৫০ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হলেও বর্তমানে তা কমে ১০ থেকে ১৫ ট্রাক হচ্ছে। শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বন্দর দিয়ে ১২টি ট্রাকে ৩৫৭টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এছাড়া গতকাল রবিবার ১৫টি ট্রাকে ৪৪৮টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। আজও আমদানি অব্যাহত রয়েছে। গরম ও বৃষ্টিতে পেঁয়াজ যেহেতু দ্রুত পচে নষ্ট হয়ে যায়। তাই কাস্টমসের প্রক্রিয়া শেষে দ্রুত যেন ব্যবসায়ীরা বন্দর থেকে পেঁয়াজ খালাস করে নিতে পারেন, এজন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে রেখেছেন।’