এক ঝড়ে বঙ্গোপসাগরে একসঙ্গে ডুবলো ২০ ট্রলার
বাংলাদেশ

এক ঝড়ে বঙ্গোপসাগরে একসঙ্গে ডুবলো ২০ ট্রলার

বঙ্গোপসাগরের উপকূল চট্টগ্রামের আনোয়ারায় লবণবোঝাই কমপক্ষে ২০টি ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অর্ধশতাধিক লোক নিখোঁজ রয়েছেন। দুর্ঘটনার পর নৌপুলিশ এবং কোস্টগার্ডের সহায়তায় সাগর থেকে ৩০ জনকে উদ্ধার করা হয়।

বুধবার (৮ মে) সকাল ৯টা থেকে ১০টার দিকে বঙ্গোপসাগরের আনোয়ার উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ের কবলে পড়ে এসব ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। এসব ট্রলার কক্সবাজারের কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও বাঁশখালী থেকে লবণবোঝাই করে সাগরপথে চট্টগ্রাম নগরীর দিকে যাচ্ছিল।

ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যাওয়া ট্রলারগুলোর মধ্যে একটির নাম ‘বার আউলিয়া’। ওই ট্রলারের মাঝি মো. ফারুক বলেন, কুতুবদিয়া থেকে সকালে লবণ বোঝাই করে চট্টগ্রাম শহরের দিকে যাচ্ছিলাম। এরমধ্যে বঙ্গোপসাগরের আনোয়ারা উপকূলীয় এলাকায় পৌঁছলে প্রচণ্ড ঝোড়ো হাওয়া শুরু হয়। এতে আমাদের নৌকাটি হঠাৎ ঝোড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে ট্রলারটি উল্টে গিয়ে ডুবে যায়। কিছু দূরে কমপক্ষে ৩০টির বেশি ট্রলার ছিল। এর মধ্যে কোনোটি মহেশখালী আবার কেউ বাঁশখালী থেকেও লবণ নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে যাচ্ছিল। কমপক্ষে ২০টি লবণবোঝাই ট্রলার ডুবে গেছে। প্রতিটি ট্রলারে ৫ থেকে ৭ জন মাঝিমাল্লা ছিল।

বার আউলিয়া ট্রলারের মালিক কুতুবদিয়া এলাকার বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন, আমার মালিকানাধীন ‘এমভি বার আউলিয়া’ ট্রলারটি লবণ নিয়ে কুতুবদিয়া থেকে চট্টগ্রাম নগরীতে যাচ্ছিল। ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে গেছে। একইসঙ্গে কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও বাঁশখালী থেকে লবণবোঝাই আরও ২০টির বেশি ট্রলার গহিরার বার আউলিয়া উপকূলে সাগরে ডুবে যায়। তবে আমার ট্রলারের মাঝি মাল্লাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। আমার ডুবে যাওয়া ট্রলারের মূল্য ২০ লাখ টাকা।

গহিরা বার আউলিয়া নৌপুলিশের ইনচার্জ এসআই টিটু দত্ত বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আজ সকালে বঙ্গোপসাগরে আনোয়ারা উপকূলে বেশ কয়েকটি ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে নৌপুলিশ দুটি বোট নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সাগর থেকে দুই দফায় ২০ জনকে উদ্ধার করি।  এছাড়াও কোস্ট গার্ডের একটি টিম সাগরে উদ্ধার তৎপরতা চালায়। তারাও বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেন।

তিনি আরও বলেন, উদ্ধার হওয়া ট্রলারের মাঝিদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছে, ট্রলারে লবণ নিয়ে কুতুবদিয়া, বাঁশখালী ও মহেশখালী থেকে চট্টগ্রাম শহরে যাচ্ছিল। সাগরে হঠাৎ ঝোড়ো হাওয়া শুরু হলে উল্টে যায় অন্তত ২০টির বেশি ট্রলার। প্রতিটি ট্রলারে ৫-৬ জন করে মাঝিমাল্লা ছিল। তবে বহরে ৩০-৩৫ টি ছিল বলে তারা জানিয়েছে। এখন পর্যন্ত কতটি ট্রলার ডুবেছে এবং এতে কতজন মাঝিমাল্লা ছিল তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে কেউ মারা গেছে বা হতাহত হয়েছে এ ধরনের খবর পাওয়া যায়নি।

নৌপুলিশের উদ্ধার করা মাঝিমাল্লাদের মধ্যে রয়েছেন- বাঁশখালী উপজেলার আল্লাহর দান ট্র্রলারের জিয়া, আলী, মানিক, সোহেল, মনচুর, জাবেদ আহমদ। কুতুবদিয়া উপজেলার তৌফিক এলাহী ট্রলারের মাঝি মানিক, নুরুল আমিন, আনিস। বার আউলিয়া ট্রলারের মাঝি ফারুক, বদি আলম, আবু হানিফ ও আবু তৈয়ব।

চট্টগ্রাম সদরঘাট নৌপুলিশের ওসি মো. একরাম উল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন মাঝিমাল্লাকে নৌপুলিশ এবং কোস্টগার্ড যৌথভাবে উদ্ধার করেছে। স্থানীয় লোকজনও বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করে। তবে এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

Source link

Related posts

রাত পোহালেই ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা, দুশ্চিন্তায় জেলেরা

News Desk

বাবুগঞ্জে এডিপি’র প্রকল্পে শুভংকরের ফাঁকি

News Desk

রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে নিহত যুবকের মায়ের আহাজারি, ফেরত চান লাশ

News Desk

Leave a Comment