Image default
বাংলাদেশ

এক বছরে শাহ আমানত দিয়ে এসেছে ১০ হাজার কেজি স্বর্ণ

চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে গত এক বছরে ১৯৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকার স্বর্ণ আমদানি হয়েছে। মোট স্বর্ণ আমদানির পরিমাণ ১০ হাজার কেজি ৬৩ গ্রাম। স্বর্ণের বার ও স্বর্ণালংকার হিসেবে এসব স্বর্ণ আমদানি হয়েছে। 

২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাগেজ রশিদের মাধ্যমে নয় হাজার ৭৯৭ কেজি স্বর্ণের বার আমদানি হয়েছে। এসব স্বর্ণ আমদানি বাবদ ১৬৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা রাজস্ব পেয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। ব্যাগেজ রশিদের মাধ্যমে স্বর্ণালংকার আমদানি করা হয়েছে নয় কেজি। অলংকার আমদানি খাতে চট্টগ্রাম কাস্টমস রাজস্ব পেয়েছে এক কোটি ৪০ লাখ টাকা। 

পাশাপাশি ডিটেনশন মেমো বা ডিএমকৃত স্বর্ণের বার ও স্বর্ণালংকার আমদানি হয়েছে ৪৪ দশমিক ৭৫ কেজি। এসব স্বর্ণ ছাড় করার পর শুল্ককর পাওয়া গেছে ২৭ কোটি টাকা। বিমানবন্দরে সাময়িকভাবে আটক স্বর্ণগুলোকে ডিএমকৃত (ডিটেনশন মেমো) স্বর্ণ বলা হয়।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিমানবন্দরে বৈধভাবে স্বর্ণ আমদানি বাড়ছে। এই খাতে শুল্ককর আদায়ও বেশ সন্তোষজনক। স্বর্ণ আমদানিতে অত্যন্ত সহজ পথ থাকার পরও কিছু লোক অবৈধভাবে স্বর্ণ আনার চেষ্টা করেন। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রত্যেক যাত্রীর পাশাপাশি ব্যাগেজ স্ক্যানিং করা হয়। স্ক্যানিংয়ে ধরা পড়লে অবৈধভাবে বিদেশ থেকে আনা স্বর্ণ নিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েন যাত্রীরা। অথচ একটি স্বর্ণের বার বৈধপথে আমদানি করলে ২০ হাজার টাকা শুল্ককর দিতে হয়। বিমানবন্দরে ব্যাংকের মাধ্যমে শুল্ককর পরিশোধ করে সঙ্গে সঙ্গে স্বর্ণ নিয়ে যেতে পারেন যাত্রীরা। শুধুমাত্র অল্প পরিমাণ শুল্ককর ফাঁকি দিতে বিমানবন্দরে নানা কৌশলে স্বর্ণ পাচারের চেষ্টা করেন কিছু লোক।

ডিএমকৃত স্বর্ণ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তারা জানান, বিমান থেকে যাত্রী নামার পর আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে চেকিং করা হয়। এ সময় কাস্টমসের পক্ষ থেকে বিমানবন্দরে মাইকিং করা হয় শুল্ককরযোগ্য কোনও পণ্য আছে কিনা তা জানাতে। যাত্রীদের জন্য একটি ফরমও তৈরি করে রাখা হয়; যেখানে শুল্ককরযোগ্য পণ্যের বিষয়ে উল্লেখ করতে হয়। চেকিং শুরুর আগেই বিমানবন্দরে কর্মকর্তাদের কাছে যাত্রী তার ব্যাগে থাকা স্বর্ণ বা অলংকারের ঘোষণা দেন। অনেক যাত্রী ঘোষণা যা দেন তার চেয়ে বাড়তি কিছু স্বর্ণ ব্যাগে বা অন্য কোথাও লুকিয়ে রাখেন। চেকিংয়ে ধরা পড়লে সাময়িকভাবে তা আটক করা হয়। এরপর এক সপ্তাহ স্বর্ণগুলো আটক থাকে কাস্টমসের কাছে। এক সপ্তাহের মধ্যে আটক স্বর্ণের শুল্ককর সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করে কোনও ঝামেলা ছাড়াই ছাড় করিয়ে নিতে পারেন যাত্রীরা। এক সপ্তাহের মধ্যে স্বর্ণ ছাড় করিয়ে না নিলে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে বিশেষ কাস্টোডিয়ান শাখায় স্বর্ণগুলো জমা থাকে। পরে কাস্টমস কমিশনার বরাবর যাত্রীকে স্বর্ণ ছাড়ের আবেদন করতে হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে শুনানি হয়। শুনানির পর জরিমানা ধার্য করা হয়। অর্থাৎ এক সপ্তাহের মধ্যে বিমানবন্দর থেকে স্বর্ণ ছাড় না করলে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস থেকে ছাড় করালে শুল্ক করের পাশাপাশি জরিমানাও দিতে হয়।

কাস্টমস সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে একজন যাত্রী বৈধভাবে ১১৭ গ্রাম করে দুটি স্বর্ণের বার আনতে পারেন। অলংকার হিসেবেও ১০০ গ্রাম সমপরিমাণ স্বর্ণ আমদানি করতে পারেন। এসব স্বর্ণ আমদানি করতে কাস্টমসে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করতে হয় না। বিমানবন্দরেই প্রয়োজনীয় শুল্ককর দিয়ে স্বর্ণ আমদানি করা যায় ব্যাগেজ রুলসের আওতায়। কিন্তু ভুল করে না বুঝে অবৈধভাবে স্বর্ণ আমদানি করেন কিছু লোকজন। এতে তারা স্বর্ণ জব্দের ঝুঁকিতে থাকেন। এক্ষেত্রে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হয় তাদের।

 

Source link

Related posts

সংস্কার হচ্ছে কালুরঘাট রেলসেতু, বন্ধ থাকবে যান চলাচল, প্রস্তুত ফেরি

News Desk

ঐতিহ্যবাহী ‘ঘুড়ির মেলা’ ঘিরে উৎসবের আমেজ

News Desk

নদীতে ভেসে আসা লাশের পরিচয় মিলেছে

News Desk

Leave a Comment