Image default
বাংলাদেশ

‘এবারের বর্ষায় ফেরি ও লঞ্চঘাট টিকবেতো’

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া প্রান্তের ফেরি ও লঞ্চ ঘাট গত বছরের পদ্মায় ভয়াবহ ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভাঙনের কারণে বন্ধ থাকে লঞ্চ চলাচল। সেই সময় ফেরিতে ভোগান্তি নিয়ে পদ্মা নদী পাড়ি দেয় সাধারণ যাত্রীরা। ভাঙন প্রতিরোধে ২০২১ সালে ১৩শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাট রক্ষায় আধুনিকায়ন প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। তবে বছর পেরিয়ে গেলেও ভাঙন রোধে কাজ শুরু করতে পারেনি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও পানি উন্নয়ন বোর্ড। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছেন বিআইডব্লিউটিএর ছাড় দেওয়া অর্থ অনুযায়ী ৫১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ফেরি ও লঞ্চঘাট এলাকাসহ দেবগ্রাম ইউনিয়নের চার কিলোমিটার এলাকায় সিসি ব্লক দিয়ে নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ করা সম্ভব নয়। তাদের চাহিদা দ্বিগুণ টাকার। এ অবস্থায় দ্রুত কাজ শুরু করা না গেলে আগামী বর্ষায় বিপর্যয়ে পড়বে দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরিঘাট। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা হাজার হাজার যাত্রীর মুখোমুখি হতে হবে সীমাহীন ভোগান্তির।  

দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ফেরিঘাট এলাকার বাসিন্দা চান্দু মোল্লা তিনি বলেন, গত বছর পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে আমার ভিটেমাটি নদীগর্ভে চলে গেছে। পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে প্রতি বছরই শত শত মানুষের ঘরবাড়ি ভাঙে। ভাঙনের সময় পানি উন্নয়ন বোর্ড বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রক্ষার চেষ্টা করে। গত বছর আমার বাড়ি ভেঙে গেছে। তখন শুনেছিলাম ফেরিঘাট ও আশপাশের এলাকার মানুষকে রক্ষায় হাজার কোটি টাকার কাজ শুরু হবে। তারতো কোনও খোঁজ নেই। এ বছর যে কি হবে, তা আল্লাহ ভালো জানেন। 

স্থানীয় বাসিন্দা বাবু ব্যাপারী বলেন, গত বছর পদ্মার ভাঙনে ফেরিঘাট এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। লঞ্চঘাটের রাস্তা এখন পর্যন্ত চালু করা সম্ভব হয়নি। নদীর যে অবস্থা দেখছি, এবার বর্ষায় অবস্থা আরও ভয়াবহ হবে। উজান থেকে নেমে আসা স্রোত সোজা লঞ্চঘাটে আঘাত করবে। পন্টুন সরানোরও সময় পাবে না। যাও বা বসবাসের জন্য একটু জমি ছিল, এবার মনে হয় তাও কেড়ে নেবে পদ্মা। তাই ভাবছি এবারের বর্ষায় ফেরি ও লঞ্চঘাট টিকবেতো? 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৌলতদিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ফেরিঘাট নিয়ে নানান রাজনীতি আর দুর্নীতি হয়। এখানে কাজের ভাগ-ভাটোয়ারা হয়। ক্ষমতাসীন দলের হস্তক্ষেপে ঘাট নিয়ন্ত্রণ হয়। কারণ এখান দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার ট্রাক, যাত্রীবাহী বাস ও মানুষ পারাপার হয়। অব্যবস্থাপনার কারণে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয়। অনেক আমলারা চায় এখানে অব্যস্থাপনা থাকুক, তাতে হাজার হাজার মানুষ সরকারের সমালোচনা করে। এতে ভোটের মাঠে প্রভাব পড়বে।

ফেরিঘাট গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা মুন্সী বলেন, ১৩শ’ কোটি টাকার কাজ কেন শুরু করা হয়নি, তা আমি জানি না। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করার দরকার ছিল। এ বছর যদি আগে থেকেই কাজ না করা হয়, তাহলে দৌলতদিয়া ঘাটে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙন কেউ ঠেকাতে পারবে না। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ বাস্তবায়নে তিনি একাধিক ঠিকাদার নিয়োগের পরামর্শ দেন।

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান অঙ্কুর বলেন, আগামী বছর পদ্মা নদী আরও আগ্রাসী হবে। ভাঙনের ভয়াবহতা বাড়বে। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ করতে পারলে লঞ্চ ও ফেরিঘাট ঠেকানো সম্ভব হতো। কাজ শুরু করতে চাহিদাকৃত অর্থ ছাড় দিতে অনুরোধ করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই কর্মকর্তা।

 

Source link

Related posts

যশোরে দিনভর বৃষ্টি, শহরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

News Desk

কাহারোলে পাটের আবাদ বেড়েছে

News Desk

যেথায় নদী-পাহাড় আর প্রকৃতির মিতালি, সৌন্দর্যে মুগ্ধ পর্যটকরা

News Desk

Leave a Comment