সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার ছায়ার হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। রবিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে হাওরের মাউতি বাঁধ ভেঙে যায়। এতে বছরের একটি মাত্র ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ জেলায় ছায়ার হাওরের অবস্থান। তবে এর বেশিরভাগ অংশ পড়েছে শাল্লা উপজেলায়। শনিবার রাতে ঝড়বৃষ্টিতে মাউতির বাঁধে ফাটল দেখা দেয়। স্থানীয়রা বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানালেও বাঁধ সংস্কারে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে পানির তোড়ে ভোরে বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি ঢুকতে শুরু করে।
কৃষকরা বলছেন, ছায়ার হাওরের প্রায় অর্ধেক ধান ইতোমধ্যে কাটা হয়েছে। তবে বাকি অর্ধেক বাঁধ বেঙে পানি ঢুকে তলিয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা হাওরের আধাপাকা ধান কাটার চেষ্টা করছেন। কিন্তু পানির উচ্চতা বাড়ায় সেটা সম্ভব হচ্ছে না। রাতেই পুরো হাওর তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
স্থানীয় কৃষক শহীদ আহমেদ জানান, ছায়ার হাওরে ধান চাষ করেন তিনি। ইতোমধ্যে কিছু ধান কাটা হয়ে গেছে। কিন্তু উফশী জাতের ধান সবে কাটা শুরু হয়েছে। সেগুলো মাত্র পাকতে শুরু করেছে। আরও ১০ দিন সময় পেলে সব কাটা সম্ভব হতো।
বাহারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু বলেন, ‘ছায়ার হাওরের অর্ধেক ফসল কাটা হয়েছে। বাকি ফসল মাউতি বাঁধ ভাঙায় তলিয়ে যাচ্ছে। বাঁধে ফাটল দেখা দেওয়ার পর প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড যদি দ্রুত সংস্কারে এগিয়ে আসতো, তাহলে কৃষকদের এমন অবস্থায় পড়তে হতো না।’
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র বলেন, ‘ছায়ার হাওরে ইতোমধ্যে ৯০ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। আরও দুই-একদিন সময় পেলে শতভাগ ধান কেটে ফেরা যেতো।’
শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব বলেন, ‘স্থায়ী বাঁধ ভেঙে গেছে। গত রাতে ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। এতে বাঁধের মাটি নরম হয়ে পড়ে। পানি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় না কমায় বাঁধে চাপ রয়েছে।’
জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হবে। তবে এই হাওরের ৯০ শতাংশ ফসল কাটা হয়েছে। তারপরও যদি কেউ ক্ষয়ক্ষতির শিকার হন, সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’