Image default
বাংলাদেশ

ওয়াশিং পাউডার কেজিতে বেড়েছে ৯০ টাকা

অনেকটা নীরবেই গত দুই থেকে দেড় মাসে সাবানজাত পণ্যের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। দৈনন্দিন অতি প্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম বাড়লেও ক্রেতারা এটিকে বাদ দিতে পারছেন না বাজারের তালিকা থেকে। তাই দাম যতই বাড়ুক, একপ্রকার কিনতে বাধ্যই হচ্ছেন তারা।

শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) রাজধানীর কয়েকটি স্থানীয় বাজার ঘুরে দেখা যায়, সাবান থেকে শুরু করে কাপড় ধোয়ার ডিটারজেন্ট পাউডার প্যাকেটপ্রতি কয়েক ধাপে দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৯০ টাকা। সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে ইউনিলিভার কোম্পানির সাবানজাত পণ্যগুলোর। পাশাপাশি দেশীয় কোম্পানিগুলোও পিছিয়ে নেই। তারাও তাদের পণ্যের দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে দফায় দফায়।

বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ১ কেজি প্যাকেটের রিন ৮৫ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৮০ টাকা। হুইল ১ কেজির প্যাকেট ছিল ৯০ টাকা, যা এখন কিনতে হয় ১৪০ টাকায়। এ ছাড়া ১ কেজি প্যাকেটের কেয়া ডিটারজেন্ট ১১০, ঘড়ি ১৩০, ইউনি ওয়াশ ১৪০ ও চাকা ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগের দামের তুলনায় ৫০ থেকে ৭০ টাকা করে বেশি।

গোসলের সাবানের মধ্যে ১৫০ গ্রামের লাক্স সাবান ৪০ থেকে বেড়ে ৮০ টাকা হয়েছে। মেরিল ৪০ থেকে হয়েছে ৬০ টাকা। লাইফবয় ১০০ গ্রাম ৩৫ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকা হয়েছে। একই অনুপাতে বেড়েছে কাপড় ধোয়ার সাবানও।

দাম বাড়ার বিষয়ে মিরপুরের নোয়াখালী স্টোরের দোকানি নিজাম মতিন বলেন, ‘প্রতিটা গুঁড়া সাবান ও শরীরে মাখার সাবানের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে। যাদের টাকা আছে, তারা বেশি করে কিনে রাখছে সামনে আরও বাড়বে এই চিন্তা করে। আর যাদের টাকা কম, তারা এসে কম দামেরগুলো খোঁজে। ইউনিলিভার প্রডাক্টের দামই সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। তাদের দেখাদেখি অন্যান্য কোম্পানি তাদের প্রডাক্টের দাম বাড়ায়া দিছে।’

তিনি বলেন, ‘অনেকে বলছে ডলার নাই এই দেশে। এর জন্য মাল আমদানি করতে পারছে না। আসলে সরকার বড় কোম্পানিগুলারে চাপ দিচ্ছে না।’

মিরপুরের আরেক দোকানি আবদুল হালিম বলেন, ‘দাম বাড়াতে এখন চালান বেশি খাটছে, কিন্তু লাভ বাড়ে নাই। এদিকে আবার কমিশন দেওয়া বন্ধ করে দিছে। ডিলাররা বলে তারাই দাম দিয়ে প্রডাক্ট আনছে। এখন কমিশন দিলে তাদের নাকি লাভ থাকে না। তাদের কথা নিলে নেন, না নিলে নাই।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের না নিয়েও উপায় নাই। একটা কাপড় ধোয়ার পাউডারের সঙ্গে আরও দুই-চারটা জিনিস বিক্রি করা যায়। এখন দাম বাড়লেও মানুষ তো বাজারে আইসা কম কইরা হইলেও মিলায়া-ঝিলায়া নিচ্ছে।’

সাবানজাত পণ্যের দাম বাড়ায় ক্রেতারা এখন কম দামি পণ্যের প্রতি বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে। অনেকেই প্রয়োজনের অর্ধেক নিয়ে মাস পার করছে বলে জানান ক্রেতারা।

দ্রব্যমূল্য বাড়ায় কোনও সঞ্চয় না রেখে আয়ের পুরোটাই এখন মাসিক বাজার খরচে ব্যয় করতে হয় বলে জানান ক্রেতা মিলন হাওলাদার।

তিনি বলেন, ‘জিনিসপত্র কেনা তো আর বন্ধ রাখা যায় না। এগুলা তো এখন প্রয়োজনীয় প্রডাক্ট। ময়লা কাপড়চোপড় নিয়ে কি আর চলা যায়? তাই দাম যা-ই হোক কিনতে হচ্ছে। এখন বলতে পারেন যারা আগে একটু সঞ্চয়ের চিন্তা করতো, তারা ওই সঞ্চয়টা না করে পুরোটাই ব্যয় করছে। আর যাদের আয়ই কম, তারা কম ব্যবহার করে না করে চলছে। এসে কম দামে কি আছে সেইটা খোঁজে।’

বাসার গৃহিণীরাও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয়টি এখন মানিয়ে নিচ্ছে মন্তব্য করে মিজানুর রহমান বলেন, ‘বাসার লোকেরাও এখন বুঝতে পারছে দিনে দিনে সবকিছুর দাম বাড়ছে। আগে একটু কম দামি ডিটারজেন্ট পাউডার নিয়ে গেলে আপত্তি করতো যে কাপড় ভালো পরিষ্কার হয় না। হাতের চামড়া ক্ষয় হয়। এখন যা-ই নিয়ে যাই তারা আর এই বিষয়ে কথা বলে না।’

ব্যবহার কম করার চেষ্টা করলেও কমানো যায় না মন্তব্য করে ক্রেতা গৃহিণী তানজিলা হক বলেন, ‘দাম বাড়লেও ব্যবহার কমানো যাচ্ছে না। আগে একটা আধাকেজি ডিটারজেন্ট পাউডারের প্যাকেট এক সপ্তাহ চালাইতাম। এখন কম ব্যবহার করে দুই-এক দিন বেশি ব্যবহার করা যায়, এই আর কি। সেইটাতে আর কতটুকুই সাশ্রয় হয়? ৫ টাকা, ১০ টাকা বাড়াইলেও মানা যায়। একদম ডাবল দামে কিনতে হচ্ছে!’

Related posts

নমুনা পরীক্ষায় আজও শনাক্তের হার ১৯ শতাংশের ওপরে

News Desk

বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে নেতাকর্মীদের ঢল

News Desk

করোনায় আরও ৬৩ মৃত্যু, শনাক্ত ৩৮৪০

News Desk

Leave a Comment