ওসির অপসারণ দাবিতে হরতাল ডেকেছেন আ.লীগ নেতারা
বাংলাদেশ

ওসির অপসারণ দাবিতে হরতাল ডেকেছেন আ.লীগ নেতারা

পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান তানভীর ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করায় এর প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে আটঘরিয়া থানার ওসিকে অপসারণের দাবিতে আগামী বুধবার (১২ জুন) আটঘরিয়ায় অর্ধদিবস হরতাল ঘোষণা করেছেন তারা।

রবিবার (৯ জুন) বেলা ১১টার দিকে আটঘরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি আটঘরিয়া বাজার হয়ে থানার সামনে দিয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার বাজার মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় টায়ার জ্বালিয়ে পাবনা-চাটমোহর মহাসড়ক অবরোধ করেন নেতাকর্মীরা। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র শহীদুল ইসলাম রতন দাবি করেন, ‘আটঘরিয়ার থানার ওসি হাদিউল ইসলাম আটঘরিয়ার দাগি সন্ত্রাসীদের সঙ্গে ওঠাবসা করেন। তার প্রত্যক্ষ মদতে কিছু সন্ত্রাসী আটঘরিয়ায় যাই ইচ্ছে তাই করছেন। ওনার পছন্দ না হলে উনি কোনও মামলা নিতে চান না। ওসির সঙ্গেই সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে ঘোরেন কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেন না। এই ওসিকে আটঘরিয়ার মানুষ চায় না। তার অপসারণের দাবিতে আগামী বুধবার (১২ জুন) আটঘরিয়ায় অর্ধদিবস হরতাল পালিত হবে।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দেবোত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাইমিন হোসেন চঞ্চল দাবি করেন, ‘ওই ওসি আটঘরিয়ায় যোগদানের পর থেকেই আটঘরিয়ায় আইনশৃঙ্খলা অবনতি ঘটেছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর ও নেতাকর্মীদের কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না বরং সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিয়ে নিরীহ নেতাকর্মীদের নামে হয়রানি করছেন।’

নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান তানভীর ইসলাম দাবি করেন, ‘নির্বাচনের দিন আমি বিভিন্ন কেন্দ্র কেন্দ্র ঘুরে নির্বাচন নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। কিন্তু আমাকে নির্বাচনের দিন প্রতিপক্ষের অফিস ভাঙচুরের আসামি করা হলো, তাও ১০ দিন পর! আটঘরিয়ার চিহ্নিত সন্ত্রাসী জুয়েলের নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর এবং নেতাকর্মীদের কুপিয়ে জখম করা হলো, তারা এখনও হাসপাতালে ভর্তি। সেই জুয়েলের নামে যখন মামলা দেওয়া হলো সেই জুয়েলের অভিযোগের ভিত্তিতে আমার নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হলো। আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর ও নেতাকর্মীদের কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার মামলাকে প্রভাবিত করতেই আমার নামে এই মিথ্যা মামলা দেওয়া হলো।’

এ বিষয়ে আটঘরিয়ার থানার ওসি হাদিউল ইসলাম দাবি করেন, ‘আমার অপসারণের বিষয়টি তাদের রাজনৈতিক বিষয় হতে পারে। কেন তারা আমার অপসারণ চাচ্ছেন তার সুস্পষ্ট কারণ যদি উল্লেখ করতে পারেন তাহলে আমি আপনাদের সেই বিষয়ে বলতে পারবো। আমি চেইন অব কমান্ডে কাজ করি। তাই আমি বিশ্বাস করি, আমি যে কাজগুলো করেছি তার যথাযথ আইনি দিকগুলো মেইনটেইন করেই করেছি। আমি কারও প্রভাবে প্রভাবিত নয়, আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং আইন যেভাবে বলে আমি সেভাবেই কাজ করি।’

উল্লেখ্য, গত ৩ জুন পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা বিজয়ী প্রার্থী তানভীর ইসলামের পাঁচ সমর্থককে কুপিয়ে জখমের অভিযোগ ওঠে। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের আসবাবপত্র ও তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় পরাজিত প্রার্থীর সমর্থক জুয়েলসহ কয়েকজনের নামে মামলা করা হয়। মামলার পর গতকাল শনিবার (৮ জুন) প্রধান অভিযুক্ত জুয়েলের দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান তানভীর ইসলামসহ কয়েকজনের নামে নির্বাচনের দিন জুয়েলের কার্যালয় ভাঙচুরের মামলা করা হয়।

Source link

Related posts

উপহারের বক্সে কাফনের কাপড়

News Desk

খুলনায় পায়ে হেঁটে শহরে ঢুকছে অসংখ্য মানুষ

News Desk

‘এত পা‌নি কখনও হয়‌নি অতীতে’

News Desk

Leave a Comment