কম দামে না মিললেও বেশি দামে পাওয়া যাচ্ছে সার
বাংলাদেশ

কম দামে না মিললেও বেশি দামে পাওয়া যাচ্ছে সার

চুয়াডাঙ্গায় সার সরবরাহ স্বাভাবিক করতে নানামুখী উদ্যোগ নিলেও এখনও সংকট কাটেনি। এখন পর্যন্ত ডিলারদের কাছে মিলছে না চাহিদামতো নন-ইউরিয়া সার। তবে আগের মতোই অতিরিক্ত দামে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সার পাচ্ছেন চাষিরা।

কৃষকদের অভিযোগ, সারের কৃত্রিম সংকটে ভরা মৌসুমে গোলকধাঁধায় পড়েছেন তারা। তবুও বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত দামেই সার কিনতে হচ্ছেন। এতে যেমন বাড়ছে আবাদ খরচ তেমনি দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।

জানা গেছে, চলতি রবি মৌসুমে ভুট্টা চাষের তোড়জোড় শুরু হলে জেলাজুড়ে নন-ইউরিয়া সারের সংকট তীব্র হয়। সরকারি ডিলারদের কাছে যখন ভর্তুকি মূল্যে সার পাওয়া যায় না তখন অতিরিক্ত মূল্যে খুচরা ব্যবসায়ীদরে কাছে পাওয়া যায় সার।

এমন পরিস্থিতিতে সার সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দফায় দফায় সার ডিলারদের সঙ্গে বৈঠক হয়। সার সংকটকে পুঁজি করে অতিরিক্ত মূল্য আদায় না করতে বারবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন স্বয়ং জেলা প্রশাসক। কিন্তু এরপরও সার সংকট কাটেনি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় রবি মৌসুমের চাষাবাদে সারের চাহিদা বাড়ে। চলতি মৌসুমে ৯৪ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে চাষ শুরু হয়েছে। এসব জমির অধিকাংশ ক্ষেতে এখন ভুট্টা চাষ করা হয়। ভুট্টা চাষের শুরুতে সারের প্রয়োজন হয় বেশি।

কৃষকদের অভিযোগ, ডিলারদের কাছে গেলে চাহিদা মতো সার পাওয়া যায় না। বিঘা প্রতি জমির জন্য ১০ কেজি সার দিচ্ছে। তাতে আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না। আবার খুচরা দোকান থেকে সার পাওয়া গেলেও দাম ৩০০-৪০০ টাকা বেশি।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা বেলগাছি গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, প্রয়োজনের সময় সার পাচ্ছি না। আবার অপ্রয়োজনে সারের সংকট নেই। প্রতিবছরই এই সময় কমবেশি সারের সংকট দেখা দেয়। তবে এবার এই সংকট আরও তীব্র হয়েছে।

আরেক কৃষক রফিক হোসেন বলেন, ভুট্টা চাষের সময় প্রচুর পরিমাণ সারের প্রয়োজন হয়। না হলে ফলন ভালো হয় না। কিন্তু সরকারি ডিলাররা সে পরিমাণ সার দিতে পারছে না। খুচরা ব্যবসায়ীরা যদিও বিক্রি করছে কিন্তু সেখানে দাম বেশি। যেখানে ডিলাররা সার দিতে পারছে না, সেখানে খুচরা ব্যবসায়ীরা ঠিকই সার মজুত করে রেখেছে। তাহলে
খুচরা দোকানিরা সার কোথা থেকে পাচ্ছে?

খুচরা ব্যবসায়ীদের যুক্তি, সারের সংকট নেই। অন্য স্থান থেকে সার নিয়ে এসে চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সারের দাম কিছুটা বাড়তি।

চুয়াডাঙ্গা জেলা বিসিআইসি সার ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আকবর আলী বলেন, রবি মৌসুমে ডিএপি এবং এমওপি সারের চাহিদা বাড়ে। চাহিদা মতো সার না পাওয়ায় সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। এ বছর যে পরিমাণ সারের চাহিদা পাঠানো হয়েছিল তার তুলনায় আমরা সার পেয়েছি ৫৫-৬০ শতাংশ। ফলে একটি সংকট শুরু থেকেই রয়ে গেছে।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার বলেন, সরকার কৃষকদের জন্য ভর্তুকি মূল্যে সার দিচ্ছে। সার ক্রয়-বিক্রয়ে কোনও কারসাজি বা সিন্ডিকেট করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নিরবচ্ছিন্নভাবে সকল কৃষকদের মাঝে সার সরবরাহ করার জন্য কাজ চলছে। সংকট দিনে দিনে কেটে যাচ্ছে। আর কয়দিন পর সার সংকট থাকবে না।

Source link

Related posts

‘সাহেব আর নেই, মনটারে বুঝাইতে পারতেছি না’

News Desk

কাঁচামালের অভাব সেরাম ইনস্টিটিউটে, ৩ মাস ভ্যাকসিন পাবে না বাংলাদেশে

News Desk

ঘণ্টার ব্যবধানে চট্টগ্রাম কারাগারের দুই বন্দির মৃত্যু 

News Desk

Leave a Comment