ঝিনাইদহে সরকারি ভেটেরিনারি কলেজে পিসিআর ল্যাব থাকার পরও করোনা মহামারির সময়েও সেটি চালু নেই। এটিই জেলার একমাত্র ল্যাব। ফলে নমুনা পরীক্ষা করা যাচ্ছে না এ জেলায়। ল্যাবে পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠাতে হচ্ছে পাশের কুষ্টিয়া, যশোর এবং খুলনা জেলায়।
সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় এখানে দ্রুত গতিতে বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার। গত ২৪ ঘণ্টায় ঝিনাইদহে করোনা আক্রান্ত হয়ে ২ জন এবং উপসর্গ নিয়ে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ২৪২টি নমুনা পরীক্ষা করে ১১৫ জনের দেহে ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৪৩৪৫ জন। এ অবস্থায় দ্রুত ও নির্ভুলভাবে বেশি সংখ্যক নমুনা পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে এ জেলায়। সংশ্লিষ্টরা জানান, জেলার সরকারি ভেটেরিনারি কলেজে ২০১৭ সালে ভাইরোলজি বিভাগে পিসিআর মেশিন আনা হলেও তা আজও চালু হয়নি। ইতোমধ্যেই পিসিআর ল্যাব চালুর দাবিতে মানববন্ধনও করেছে একাধিক সংগঠন।
এদিকে সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের পিসিআর ল্যাব ও মেশিনের তথ্য ও ছবি ধারণ করতে গেলে বাধা দেন কলেজ অধ্যক্ষ ডা. গণেশ চন্দ্র মন্ডল। তিনি বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব অনুমতি দিলেই কেবল তথ্য ও ছবি নেয়া যাবে। তবে এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ-এর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘ল্যাবের ছবি নেয়ার বিষয়ে আমার কাছে আবেদনের কোনো প্রয়োজন নেই। ক্যাম্পাস এলাকার মধ্যে তিনি কি করবেন এটা তার কাজ।
ওই ল্যাবে পরীক্ষা করানো হচ্ছে না কেন তা জানতে চাইলে তিনি অধ্যক্ষ ডা. গণেশ চন্দ্র মন্ডল বলেন, ‘কলেজে একটি পিসিআর মেশিন আছে। তবে এখানে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে যে বায়োসেপটিক ক্যাবিনেট দরকার, সেটি নেই। তাছাড়া ল্যাবটি চালু করার জন্য আমাদের দক্ষ জনবলও নেই।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের খুলনা বিভাগের সমন্বয়কারী একরামুল হক লিকু বলেন, ‘সীমান্তবর্তী জেলার কারণে এখানে করোনা যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে আমাদের জন্য এটা খুই আতঙ্কের। করোনার পরীক্ষা বাড়ানো দরকার। সরকারি ভেটেরিনারি কলেজে পিসিআর মেশিন ও ল্যাব থাকার পরও সেখানে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় করোনা পরীক্ষা না হওয়া খুবই দুঃখজনক। যদি এ ল্যাবটি চালু করা যায় তা হলে নমুনা পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়াম, যশোর, খুলনার জন্য অপেক্ষা করতে হবে না।
এ বিষয়ে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘আমরা নমুনা সংগ্রহ করে কুষ্টিয়ায় পাঠায়। আর হাসপাতালে অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয়। যখন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ে তখন ল্যাবগুলোতে চাপ সৃষ্টি হয়। কুষ্টিয়া থেকে সময় মতো আমাদের রিপোর্ট দিতে পারে না। ঝিনাইদহে একটি ল্যাব হলে আমরা দিনের রিপোর্ট দিনেই পেয়ে যাবো। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম কোনো কথা বলতে রাজি হননি।