গাইবান্ধার সবকটি নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখনও বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদ ও ঘাঘট নদীর পানি। এছাড়া তিস্তা ও করতোয়ার পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। জেলায় এখনও পানিবন্দি অবস্থায় আছেন ৬১ হাজার মানুষ। নিরাপদ পানি ও খাবার সংকটে কষ্টে আছেন তারা।
জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চার দিন ধরে বানের পানিতে প্লাবিত হয় জেলার সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ২৩ ইউনিয়নের চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের শতাধিক গ্রাম। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েন ৬১ হাজার মানুষ। নিমজ্জিত হয় বিস্তীর্ণ এলাকার পাট, বাদাম ও শাকসবজিসহ দুই হাজারের বেশি হেক্টর জমির ফসল।
এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পুকুর ও মৎস্য খামার। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় ব্যাহত হয় যোগাযোগব্যবস্থা। বন্ধ ঘোষণা করা হয় দুর্গত চার উপজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিকসহ ১২৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
বাড়িঘর ছেড়ে পানিবন্দি অনেকে আশ্রয় নেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও উঁচু জায়গায়। এছাড়া সরকারিভাবে খোলা ১৮টি আশ্রয়কেন্দ্রেও কয়েক হাজার মানুষ আশ্রয় নেন। এরই মধ্যে দুর্গত এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। পাশাপাশি গো-খাদ্যের সংকটে গবাদিপশু গরু-ছাগল নিয়ে বিপাকে পড়েন বানভাসিরা। ফলে দুর্গত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ-কষ্ট বাড়লেও তাদের খোঁজ নেয়নি কেউ। আছে ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগও।
সাঘাটা উপজেলার বাসিন্দা রাজিব হোসেন বলেন, চার দিন ধরে আমরা পানিবন্দি। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে থাকলেও কোনও ধরনের সহায়তা পাইনি। আমরা খুব কষ্টে আছি।
যদিও বন্যাকবলিত চার উপজেলার মানুষের জন্য সরকারিভাবে ৬০৫ মেট্রিক টন চাল, নগদ ২২ লাখ টাকা, শিশু খাদ্যের জন্য ১৯ লাখ ও গো-খাদ্য ক্রয়ে ৩৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. অলিউর রহমান বলেন, ইতিমধ্যে দুর্গত এলাকায় ৮০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ছয় লাখ টাকা, শিশু খাদ্যের জন্য সাড়ে ১৫ লাখ টাকা ও গো-খাদ্যের জন্য ১৬ লাখ টাকা টাকা বিতরণের কাজ চলছে। বন্যাদুর্গত সব পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হবে।