কাউকে ছাড় দেবো না, যেকোনও মূল্যে অপরাধী দমন করবো: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ

কাউকে ছাড় দেবো না, যেকোনও মূল্যে অপরাধী দমন করবো: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

চট্টগ্রামের বাঁশখালী এবং কক্সবাজার জেলার চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া এলাকার আতঙ্ক হিসেবে পরিচিত ১২টি জলদস্যু গ্রুপের ৫০ জন ৯০টি দেশি-বিদেশি অস্ত্র এবং ২৮৩ রাউন্ড গুলি/কার্তুজসহ আত্মসমর্পণ করেছে। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায় র‌্যাব-৭ এর এলিট হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের হাতে অস্ত্র-গোলাবারুদ জমা দিয়ে তারা আত্মসমর্পণ করেন।

এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘যারা এ পেশা ত্যাগ করবেন না তারা কী দুঃসংবাদ লিখে নিয়ে যাবেন- সেটা মহান আল্লাহ জানেন। দস্যুতা আপনাদের জীবনে কখনও শান্তি ফিরিয়ে আনবে না। আমরা কাউকে ছাড় দেবো না। যেকোনও মূল্যে অপরাধীদের দমন করবো।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আজ এখানে একজন নারী জলদস্যুসহ ৫০ জন আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। তারা কখনও অত্যাচারিত বা নিপীড়িত হয়ে বাধ্য হয়েই এসব কাজে জড়িয়ে গেছেন। স্থানীয় প্রভাবশালী লোকেরাও তাদের বাধ্য করেন এসব কাজে জড়াতে।’

তিনি বলেন, ‘জনগণের কাছে র‍্যাব একটি আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক। সুন্দরবনে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন রক্ষায় ২০১২ সালে র‍্যাবকে টাস্কফোর্স হিসেবে দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। র‍্যাবের দুঃসাহসিক অভিযানে সুন্দরবন জলদস্যু মুক্ত হয়। জন্মলগ্ন থেকে সন্ত্রাস নির্মূল করতে গিয়ে র‍্যাবের ৩৩ জন সদস্য জীবন দিয়েছেন। হাজার হাজার র‍্যাব সদস্য আহত হয়েছেন। অনেকের অঙ্গহানিও হয়েছে।’

র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল মাহবুব আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম আব্দুল লতিফ, পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, র‌্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা। 
আত্মসমর্পণকারী জলদস্যুদের মধ্যে বক্তব্য দেন- মাহমুদ করিম ও জসীম উদ্দীন।

র‌্যাব জানিয়েছে, র‌্যাবের কঠোর ভূমিকায় ইতিমধ্যে সুন্দরবন অঞ্চলের জলদস্যুরা বিগত সময়ে আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন। এর ফলে গত ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার অঞ্চলে র‌্যাবের কঠোর পদক্ষেপের ফলে ২০১৮ এবং ২০২০ সালে র‌্যাব-৭ এর তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপকূলীয় অঞ্চল থেকে সর্বমোট ৭৭ জন জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেন।

বাঁশখালী, চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া অঞ্চলসহ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের ৩৪২ জন কুখ্যাত জলদস্যু এবং অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে আটক করে এবং দেশি-বিদেশি মিলিয়ে সর্বমোট দুই হাজার ৬০৩টি বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রসহ ২৯ হাজার ১২৩ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করে। এ ছাড়াও গত ২০১৮ এবং ২০২০ সালে ৭৭ জলদস্যু র‌্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসে সরকারি ও বেসরকারি প্রণোদনায় পুনর্বাসিত হয়।

গত ২০১৮ ও ২০২০ সালে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপকূলীয় অঞ্চলের ৭৭ জন জলদস্যুর সফল আত্মসমর্পণ অন্য জলদস্যুদের মাঝে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং তাদের মনে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনার আশার আলো জেগে ওঠে। 

এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় অঞ্চলের ১২টি বাহিনীর মোট ৫০ জলদস্যু আত্মসমর্পণ করছেন। এর মধ্যে ৪৯ জন পুরুষ এবং এক জন নারী জলদস্যু রয়েছেন। এই ৫০ জলদস্যুর মধ্যে তিন জন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত জলদস্যু।

Source link

Related posts

রাখাইনে যুদ্ধ: সীমান্তে আতঙ্ক কাটবে কবে

News Desk

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দিনাজপুরে ৪৪ ঈদের জামাত

News Desk

অরিত্রী আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলায় ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ

News Desk

Leave a Comment