বিশ্বমানের সব ধরনের সুবিধা সম্বলিত আন্তর্জাতিক মানের সম্মেলন কেন্দ্রসহ দেশের সর্বোচ্চ ভবন নির্মাণ কাজে একধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। ৫০ তলা আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্যে নকশা প্রণয়নে দেশি-বিদেশি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে বাণিজ্যিক অঞ্চলসহ এ বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) জনসংযোগ কর্মকর্তা এ খবর জানিয়েছেন।
ডিএসসিসি জানায়, ডিএসসিসির আওতাধীন কামরাঙ্গীরচর এলাকায় ৫০ তলার একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্যে নকশা প্রণয়নে আহবান করা আগ্রহ ব্যক্তকরণে (এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট) দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া গেছে। নকশা প্রণয়নে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের লক্ষ্যে বিগত ২৩ আগস্টে আহবান করা আন্তর্জাতিক এই এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্টে অংশগ্রহণের চূড়ান্ত সময়সীমা শেষে বুধবার দুপুরে দাখিলকৃত প্রস্তাবনাগুলো নগর ভবনে উন্মুক্ত করা হলে এ তথ্য নজরে আসে।
ডিএসসিসি আরও জানায়, দেশের সর্বোচ্চ ভবন নির্মাণে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, মিসর, সুইডেন, পর্তুগাল, হংকং, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভারত, চীন ও বাংলাদেশের ৬৫টির অধিক খ্যাতিমান প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৩৩টি প্রস্তাবনা পাওয়া যায়। পরিকল্পনাধীন ৫০ তলা আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৫ হাজার, ৩ হাজার ও ১ হাজার লোকের ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন পৃথক পৃথক সেমিনার কক্ষ ও মাল্টিপারপাস হল, প্রদর্শনী কেন্দ্র, পাঁচ তারকা হোটেল, অফিস ও বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য জায়গা, বিপণিবিতান, কনডোমোনিয়াম, রেস্তোরাঁ, ক্যাফে ও ফুড কোর্ট, সিনেমা হল, বেনকুয়েট হল, অ্যাম্ফিথিয়েটার, অবজারভেশন ডেক ও গাড়ি রাখার জায়গা থাকবে। এ ভবনে নিজস্ব বর্জ্য ও পানি ব্যবস্থাপনা, প্রাকৃতিক সৌরশক্তি ব্যবহারের ব্যবস্থা রাখা হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সংমিশ্রণ ঘটিয়ে একটি ‘গ্রিন ভবন’ হিসেবে এ সম্মেলন কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
এ প্রকল্প সম্পর্কে ডিএসসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এবং প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. আশিকুর রহমান বলেন, এতগুলো দেশের আন্তর্জাতিকভাবে স্বনামধন্য ও খ্যাতিমান প্রতিষ্ঠানের আগ্রহ প্রকাশ করে প্রস্তাবনা দেওয়া নিঃসন্দেহে আশাব্যঞ্জক। এর ফলে অনেক প্রতিষ্ঠান হতে সবচেয়ে ভালো প্রস্তাবনা বিবেচনায় নেওয়ার সুযোগ বিস্তৃত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় বাস্তবায়নে মেয়র মহোদয়ের নেতৃত্বে আমরা একটি আধুনিক, অনন্য ও দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক মানের সম্মেলন কেন্দ্র গড়ে তুলতে পারব বলে আশাবাদী। এই ‘আকাশছোঁয়া’ ভবন শুধু ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জন্যই না, পুরো দেশের জন্যই অনন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। এর ফলে মেয়র মহোদয়ের স্বপ্নপূরণ যাত্রায় আমরা আরও একধাপ এগিয়ে যাব।
উল্লেখ্য, ডিএসসিসির উদ্যোগে প্রণীত হতে যাওয়া ৩০ বছর মেয়াদি সমন্বিত মহাপরিকল্পনার আওতায় কামরাঙ্গীরচরে একটি কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হবে। এরই অংশ হিসেবে কামরাঙ্গীরচরে ৫০ তলাবিশিষ্ট একটি আন্তর্জাতিক মানের পূর্ণাঙ্গ সম্মেলন কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।